সাজাপ্রাপ্ত পলাতক এক আসামির সঙ্গে নামের মিল থাকায় কারাবন্দি ভোলার মো. লিটনের ঘটনা অনুসন্ধান করে প্রকৃত পরিচয় নির্ধারণ ও প্রয়োজনীয় আদেশ দিতে ঢাকা মহানগর বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-২ আদালতকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বিচারপতি তারিক উল হাকিম ও বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ মঙ্গলবার (১ সেপ্টেম্বর) এ আদেশ দেন।
আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী জেড আই খান পান্না, ইয়াদিয়া জামান ও মো. শাহিনুজ্জামান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাসগুপ্ত।
অমিত দাসগুপ্ত বলেন, ঢাকা মহানগর বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-২ আদালতকে ঘটনাটির অনুসন্ধান করে যাকে গ্রেফতার করা হয়েছে সেই লিটনের প্রকৃত পরিচয় নির্ধারণপূর্বক দুই সপ্তাহের মধ্যে প্রয়োজনীয় আদেশ প্রদানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। লিটনকে ওই আদালতে হাজিরও করতে হবে।
গত ২৪ আগস্ট মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র এবং লিটন এ রিট করেন। গত ২২ আগস্ট একটি জাতীয় দৈনিকে ‘শুধু নাম ঠিকানা মিলে জেল খাটছেন দিনমজুর’ শীর্ষক প্রতিবেদন যুক্ত করে এ রিট করা হয়।
গত ২৪ আগস্ট মো. শাহিনুজ্জামান জানিয়েছিলেন, আবেদনে লিটনের পরিচয় নিশ্চিতকরণে তাকে স্বশরীরে অথবা ভার্চ্যুয়ালি হাইকোর্টে হাজির করা, তাৎক্ষণিক মুক্তি দেওয়া এবং তার আটকাদেশ অবৈধ ও আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত ঘোষণা করার নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।
ওই পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়, দু’জনের নাম মো. লিটন। বাবার নাম, গ্রাম, ইউনিয়ন, উপজেলা ও জেলার নামও এক। পার্থক্য শুধু বয়সে। একজনের অপরাধে প্রায় আট মাস ধরে কারাগারে রয়েছেন আরেকজন। সাজাপ্রাপ্ত আসামি মো. লিটনের বয়স ৪১ বছর। আর যিনি জেল খাটছেন তার বয়স ৩০ বছর। তবে পুলিশের দাবি গ্রেফতার লিটন একবারের জন্যও বলেননি যে তিনি আসামি নন।
দুই লিটনেরই বাবার নাম নুর ইসলাম। তারা মারা গেছেন। দু’জনেরই বাড়ি ভোলার লালমোহন উপজেলার ধলীগৌরনগর ইউনিয়নের চতলা গ্রামে।
২০০৯ সালের ২৮ জুন পল্টন থানার আহাদ পুলিশ বক্সের সামনে থেকে ভারত ও পাকিস্তানের তৈরি আমদানি নিষিদ্ধ চেতনানাশক ট্যাবলেটসহ গ্রেফতার হন লিটন, শামীম ও আরশাদ মিয়া নামে তিনজন। এ ঘটনায় পল্টন থানায় দায়ের করা মামলায় বিচার শুরুর আগেই ওই তিনজন জামিন নিয়ে আত্মগোপনে চলে যান। পরে ২০১৪ সালের ২২ অক্টোবর ঢাকা মহানগর বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-২ আসামিদের দুই বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড ও দুই হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড দেন।
গ্রেফতার লিটনের ভাই সাইফুল ইসলাম বলেন, লিটনকে গত বছরের ৭ ডিসেম্বর গ্রেফতার করে পুলিশ। তাদের বাবা নুর ইসলাম ১০ বছর আগে মারা গেছেন। আসামি লিটনের বাড়ি তাদের বাড়ি থেকে ২-৩ মিনিটের পথ। তার বাবা ৩০ বছর আগে মারা গেছেন। বাবা মারা যাওয়ায় মাকে নিয়ে আসামি লিটন ঢাকায় চলে যান।