কিশোর আলোর অনুষ্ঠানে ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজের নবম শ্রেণির ছাত্র নাইমুল আবরারের (১৫) মৃত্যুর ঘটনায় করা মামলায় প্রথম আলোর সহযোগী সম্পাদক ও কিশোর আলোর সম্পাদক আনিসুল হকসহ পাঁচজনের জামিন আবেদন মঞ্জুর করেছেন আদালত।
আজ বৃহস্পতিবার (৩ সেপ্টেম্বর) ঢাকা মহানগর হাকিম মোহাম্মদ জসিমের আদালতে তারা আত্মসমর্পণ করে আইনজীবীর মাধ্যমে জামিনের আবেদন করেন। বিচারক শুনানি শেষে পাঁচ হাজার টাকা মুচলেকায় প্রত্যেকের জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তাদের আইনজীবী আহসানুল হক সমাজি ও প্রশান্ত কুমার কর্মকার।
আনিসুল হক ছাড়া অন্য আসামিরা হলেন- প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ সহ-সম্পাদক মহিতুল আলম, প্রথম আলোর হেড অব ইভেন্ট অ্যান্ড অ্যাকটিভেশন কবির বকুল, নির্বাহী শাহপরান তুষার ও নির্বাহী শুভাশীষ প্রামাণিক।
এর আগে বুধবার ঢাকা মহানগর হাকিম মোহাম্মদ জসিম তাদের মালামাল ক্রোকের আদেশ দেন। তবে আজ আদেশটি বিচারক প্রত্যাহার করেন।
মামলায় গত ১৬ জানুয়ারি ঢাকার অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত প্রথম আলো সম্পাদকসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেন। মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশ এ মামলায় আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার পরপরই বাদীপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ১০ জনের নামে পরোয়ানা জারির আদেশ দেয়া হয়।
১৯ জানুয়ারি হাইকোর্টে হাজির হয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে জামিনের আর্জি জানান প্রথম আলো সম্পাদকসহ ছয়জন। জামিন আবেদনকারী অপর পাঁচজন হলেন- প্রথম আলোর সহযোগী সম্পাদক ও কিশোর আলোর সম্পাদক আনিসুল হক, জ্যেষ্ঠ সহ-সম্পাদক মহিতুল আলম, প্রথম আলোর হেড অব ইভেন্ট অ্যান্ড অ্যাকটিভেশন কবির বকুল, নির্বাহী শাহপরান তুষার ও নির্বাহী শুভাশীষ প্রামাণিক।
বাকি চার আসামি কিশোর আলোর অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎ সরবরাহের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট জসীম উদ্দিন, মোশাররফ হোসেন, সুজন ও কামরুল হাওলাদার জামিনের আবেদন করেননি।
গত ১ নভেম্বর মোহাম্মদপুরে ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজ ক্যাম্পাসে এক অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয় আবরার। মহাখালীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ওই অনুষ্ঠানের আয়োজক ছিল প্রথম আলোর কিশোর সাময়িকী কিশোর আলো। প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান কিশোর আলোরও প্রকাশক; আর কিশোর আলোর সম্পাদক হলেন আনিসুল হক।
৬ নভেম্বর আবরারের বাবা মো. মুজিবুর রহমান প্রথম আলো সম্পাদকসহ অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন।
মামলায় মুজিবুর রহমান অভিযোগ করেন, ‘১ নভেম্বর তার ছেলে নাইমুল আবরার রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজে কিশোরদের ম্যাগাজিন কিশোর আলোর বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যায়।’
আদালত সেদিন নালিশি মামলাটি আমলে নিয়ে মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশকে তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ দেন।
প্রতিবেদনে মতিউর রহমান ও আনিসুল হক ছাড়াও কবির বকুল, শুভাশিস প্রামাণিক শুভ, মুহিতুল আলম, শাহপরাণ তুষার, জসিম উদ্দিন তপু, মোশারফ হোসেন, মো. সুমন ও কামরুল হাওলাদারকে ঘটনার জন্য দায়ী করা হয়।