বিচার বিভাগ স্বাধীন এবং বিচারকরা সংবিধান অনুযায়ী স্বাধীন উল্লেখ করে বিচার বিভাগের ওপর মানুষের আস্থা যেন প্রশ্নবিদ্ধ না হয় সে বিষয়ে তাগিদ দিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক।
আজ রোববার (৬ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের নতুন বিচারকদের জন্য ভার্চুয়ালি আয়োজিত পঞ্চম ওরিয়েন্টেশন কোর্সের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। পাঁচদিন মেয়াদি এ প্রশিক্ষণে জেলা জজ পদমর্যাদার ৩৫ জন প্রশিক্ষণার্থী অংশ নিয়েছেন।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, ‘বিচার বিভাগ অবশ্যই স্বাধীন। বিচারকার্যে বিচারকরা সংবিধান অনুযায়ী স্বাধীন। কিন্তু এটাও মনে রাখতে হবে যে, বিলম্বিত বিচার হলে বিচার বিভাগের ওপর মানুষের আস্থা প্রশ্নবিদ্ধ হয়। সে আস্থা যাতে প্রশ্নবিদ্ধ না হয়। তার কারণ বিচার বিভাগ রাষ্ট্রের তিনটি অঙ্গের মধ্যে অত্যন্ত প্রয়োজনীয়, জরুরি ও নির্ভরশীল একটি অঙ্গ। সেজন্য আমাদের বিচার বিভাগের মর্যাদা বজায় রেখে ন্যায়বিচার করতে হবে এবং জনগণের কাছে ন্যায়বিচার পৌঁছে দেয়ার দায়িত্ব পালন করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘বিচার বিভাগের সব কর্মকর্তা এ দায়িত্ব পালন করার জন্য প্রস্তুত এবং দক্ষ। জাতি তাদের যে দায়িত্ব দিয়েছে, সে দায়িত্বভার নিতে পারবে বলেই তারা বিচার বিভাগে কর্মরত আছেন।’
মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের প্রতিনিয়ত চ্যালেঞ্জ সামনে আসবে। আজকে করোনাভাইরাসের চ্যালেঞ্জ এসেছে। ভবিষ্যতে কী চ্যালেঞ্জ আসবে জানি না। তবে ভবিষ্যতেও চ্যালেঞ্জ আসবে। অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা দিয়ে সেসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। এ জন্য নতুন নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করার জন্য প্রশিক্ষিত হতে হবে।’
এ বিষয়ে বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। মন্ত্রী বলেন, ‘নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করার জন্য যে সক্ষমতা প্রয়োজন, যে অবকাঠামো উন্নয়ন প্রয়োজন সেটা শেখ হাসিনার সরকার করবে। কারণ তার সরকারের সবচেয়ে বড় লক্ষ্য হচ্ছে জনগণের কাছে তাদের সেবা পৌঁছে দেয়া। জনগণের কাছে বিচার সেবা পৌঁছে দেয়ার জন্য যা যা করা দরকার তা সরকার করবে।’
প্রশিক্ষণগ্রহণ করে বিচার বিভাগকে নতুন পথ দেখানোর আহ্বান জানিয়ে বিচারকদের উদ্দেশ্যে মন্ত্রী বলেন, ‘জনগণ আপনাদের দিকে তাকিয়ে আছে। তারা আপনাদের কাছে সুষ্ঠু বিচার চায়। আপনারা তাদের সুষ্ঠু ও ন্যায়বিচার দেবেন।’
আনিসুল হক বলেন, ‘চলতি বছর আমরা অন্তত ৬ লাখ মামলা কমিয়ে আনার পরিকল্পনা করেছিলাম, কিন্তু করোনাভাইরাস মহামারির কারণে সে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন বাধাগ্রস্ত হয়েছে। এ অবস্থায় ন্যায়বিচার নিশ্চিত করে কীভাবে মামলাজট কমানো যায় তা নিয়ে চিন্তা করতে হবে।’
তিনি বলেন, বছরের এখনও প্রায় চার মাস সময় আছে, এ সময়ে দেড় লাখ মামলাজট কমাতে পারলেও কিছু একটা অর্জন হয়েছে বলে মনে করতে পারব। এ বিষয়ে তিনি বিচারকদের আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করেন।
বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক বিচারপতি খোন্দকার মূসা খালেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ার ও ইনস্টিটিউটের পরিচালক মো. গোলাম কিবরিয়া বক্তব্য রাখেন।