সিরাজ প্রামাণিক:
বহু বছর আগে মার্কিন মানবতাবাদী মার্টিন লুথার কিং লিখেছিলেন, ‘যে কোন জায়গায় অবিচার ঘটলে তা সমস্ত জায়গার বিচারকে হুমকির মুখে ফেলে। ফরাসী দার্শনিক আঁনাতোলে ফ্রান্স লিখেছিলেন, ‘আইন যদি সঠিক হয় তাহলে মানুষও ঠিক হয়ে যায় কিংবা ঠিকভাবে চলে। পত্রিকায় প্রকাশিত খবর থেকে জানা যায়, দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে অনুমতি ছাড়া কোনো সরকারি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা না নিতে আইন ও বিচার বিভাগের সচিবকে চিঠি দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। অনুমতি ছাড়া সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা হওয়ায় মাঠপর্যায়ে শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা ও অপরাধ প্রতিরোধ বা দমনে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ প্রায় বাধাগ্রস্থ হচ্ছে বলে চিঠিতে জানানো হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, বিচারক, ম্যাজিস্ট্রেট বা কোনো সরকারি কর্মকর্তার কর্তব্য/দায়িত্ব পালনে কোনো কাজের জন্য সরকারের পূর্বানুমতি ছাড়া কোনো অপরাধ আমলে গ্রহণ করা যাবে না বলে ‘কোড অব ক্রিমিনাল প্রসিডিউর, ১৮৯৮’ এর সাব-সেকশন-১ এর বিধান রয়েছে।
‘জুডিশিয়াল অফিসার্স প্রটেকশন অ্যাক্ট, ১৮৫০ এর সেকশন-১ এ কোনো জজ, ম্যাজিস্ট্রেট বা কালেক্টরকে তার বিচারিক প্রকৃতির কার্যক্রম বা দেওয়া কোনো আদেশের কারণে ব্যক্তিগতভাবে দায়ী করে দেওয়ানি আদালতে মামলা দায়ের করা যাবে না। ’
মোবাইল কোর্ট আইন, ২০০৯’ এর ১৪ ধারায় বিধান রয়েছে যে, এই আইন বা তদধীন প্রণীত বিধির অধীন সরল বিশ্বাসে কৃত বা কৃত বলে বিবেচিত কোনো কাজের জন্য কোনো ব্যক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হলে, তিনি মোবাইল কোর্ট পরিচালনাকারী এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট বা ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট বা মোবাইল কোর্ট পরিচালনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অন্য কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারীর বিরুদ্ধে কোনো দেওয়ানি বা ফৌজদারি মামলা বা অন্য কোনো প্রকার আইনগত কার্যধারা রুজু করতে পারবেন না।
এছাড়াও ‘কোড অব সিভিল প্রসিডিউর, ১৯০৮’ এর সেকশন-৯ এবং অর্ডার-৭ রুল-১১(ডি) এ প্রযোজ্য ক্ষেত্রে দেওয়ানি আদালতে এখতিয়ার বারিত হওয়া ও আরজি খারিজের বিষয়ে সুস্পষ্ট বিধান রয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের চিঠিতে বলা হয়েছে, সম্প্রতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে, বিভিন্ন জেলায় জেলা প্রশাসক/জেলা ম্যাজিস্ট্রেট/কালেক্টর, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট ও সরকারি কর্মচারীদের সরকারি দায়িত্ব পালনের কাজের জন্য তাদের ব্যক্তিগতভাবে দায়ী করে মামলা রুজু করা হচ্ছে। ‘কোনো কোনো ক্ষেত্রে সরকারের পূর্বানুমোদন নেওয়ার আইনি বাধ্যবাধকতা থাকলেও তা প্রতিপালিত হচ্ছে না। এতে করে আইনের ব্যত্যয় ছাড়াও মাঠপর্যায়ে শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষা ও অপরাধ প্রতিরোধ/দমনে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ প্রায় বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। বিশেষ করে নদী, খাল, বিল, বন, জলাশয়সহ সরকারি সম্পত্তি ও স্বার্থরক্ষা, অবৈধ ক্ষতিসাধন/জবরদখল প্রতিরোধ ও উচ্ছেদ অভিযানে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছে।’
এবার প্রশ্ন উঠতে পারে মামলা দায়েরের ক্ষেত্রে ফৌজদারী কার্যবিধির ধারা ১৯৭ এর প্রয়োগ নিয়ে। এই আইনের অধীন জজ, ম্যাজিস্ট্রেট বা সরকারি কর্মচারীর বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের ক্ষেত্রে ফৌজদারী কার্যবিধির ধারা ১৯৭ এর বিধান আবশ্যিকভাবে প্রতিপালন করতে হবে। প্রাসঙ্গিক আলোচনায় বলা হয়েছে যে, সরকারের পূর্ব অনুমতি ছাড়া যে কোন অপরাধের জন্য কোন সরকারী কর্মচারীর বিরুদ্ধে আদালত কর্তৃক মামলা গ্রহণ অননুমোদিত ও এখতিয়ার বহির্ভূত বলে গণ্য হবে।
কিন্তু ফৌজদারী কার্যবিধির ৫২৯ এর (ঙ) ধারায় স্পষ্ট বলা আছে যে, যদি কোন ম্যাজিস্ট্রেট, আইনে ক্ষমতাবান না হওয়া সত্ত্বেও ভুলক্রমে সরল বিশ্বাসে ১৯০ ধারার (১) উপ-ধারার (ক) অনুচ্ছেদ বা (খ) অনুচ্ছেদ অনুসারে অপরাধ আমলে গ্রহণ করে, তবে এ নিয়মের দরুন কার্যধারা বাতিল হবে না। এ থেকে স্পষ্টই প্রমাণিত হয় যে, আদালতের ভুল আদেশ বলতে কিছু নেই।
এদিকে সংবিধানের ৩১ অনুচ্ছেদে বলা আছে যে, আইনের আশ্রয়লাভ এবং আইনানুযায়ী ও কেবল আইনানুযায়ী ব্যবহারলাভ যে কোন স্থানে অবস্থানরত প্রত্যেক নাগরিকের এবং সাময়িকভাবে বাংলাদেশে অবস্থানরত অপরাপর ব্যক্তির অবিচ্ছেদ্য অধিকার এবং বিশেষতঃ আইনানুযায়ী ব্যতীত এমন কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে না, যাতে কোন ব্যক্তির জীবন, স্বাধীনতা, দেহ, সুনাম বা সম্পত্তির হানি ঘটে।
এবার আসল কথায় আসি। পাঠক নিশ্চয়ই টাঙ্গাইলের কলেজ শিক্ষার্থী সাব্বির শিকদারের কথা মনে আছে। টাঙ্গাইল-৮ আসনের সাংসদ অনুপম শাহজাহানকে নিয়ে ফেসবুকে মন্তব্য করায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) হয়। সংশ্লিষ্ট থানার ওসি সাব্বির শিকদার নামক এক কলেজ শিক্ষার্থীকে সন্দেহ করে থানায় ডেকে আনে। এরপর একটি কুচক্রী মহলের যোগসাজশে ওই শিক্ষার্থীকে সখিপুর ইউএন’র কার্যালয়ে হাজির করা হয়। এ অবস্থায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ওই শিক্ষার্থীকে তথ্যপ্রযুক্তি আইনে ভ্রাম্যমাণ আদালত দুই বছরের কারাদণ্ড দেন। অথচ ভ্রাম্যমাণ আদালত তথ্যপ্রযুক্তি আইনে কোনভাবেই সাজা দিতে পারেন না। আইনানুযায়ী জিডি হলে তদন্ত হবে। তদন্ত ছাড়া এভাবে দণ্ড দেওয়া যায় না। এটা কেন হলো, তার ব্যাখ্যা জানতে ইউএনও ও ওসিকে তলব করেন হাইকোর্ট। বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি আশীষ রঞ্জন দাসের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের অবকাশকালীন বেঞ্চ স্বতঃপ্রণোদিত রুলসহ এই আদেশ দেন। একই সঙ্গে কারাদণ্ড পাওয়া শিক্ষার্থী সাব্বির শিকদারকে জামিন দেন আদালত।
‘ইউএনওর নির্দেশে মৎস্য কর্মকর্তাকে হাতকড়া, মুচলেকায় মুক্তি’ শিরোনামে ২০১২ সালের ২৭ জুলাই দৈনিক কালের কন্ঠ পত্রিকায় একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। পুলিশের ভাষ্য, সরকারি আদেশ অমান্য করায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের আদেশে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। সমঝোতার ভিত্তিতে থানা পুলিশ একটি মুচলেকা রেখে আটক মৎস্য কর্মকর্তাকে ছেড়ে দেয়। নিজ হাতে লেখা ওই মুচলেকায় মৎস্য কর্মকর্তা উল্লেখ করেন, আগামী ৩০ জুলাইয়ের মধ্যে প্রকল্পের সব কাগজপত্র ইউএনওর কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হবে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবুল হাসেম জানিয়েছিলেন, সরকারি আদেশ অমান্য করায় জিয়াউদ্দিনকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেওয়া হয়। পরে এক মুচলেকায় ভুলের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করলে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
২০০৭ সালে বিচার বিভাগ পৃথকীকরণের পর প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে ডিসি’রা সামারি ট্রায়াল বা সংক্ষিপ্ত বিচারের দাবি জানিয়েছিলেন। বিচার বিভাগ পৃথক্করণের পর আমরা কাঙ্ক্ষিত ফল পাইনি। কিন্তু সেটা ধীরে ধীরে আসবে। আর যদি ডিসিদের চাপে সমান্তরাল বিচারব্যবস্থার জন্ম দেওয়া হয়, তাহলে আম ও ছালা দুটোই যাবে।
মানবাধিকার আইনের নীতিমালা মতে, একজন অভিযুক্তকে অবশ্যই নিম্নলিখিত সুযোগ দিতে হবে-
- সুস্পষ্ট অভিযোগ লিখিতভাবে আনতে হবে।
- অভিযোগ সমর্থনে প্রমাণ উপস্থাপন করতে হবে।
- অভিযোগ প্রমাণে সাক্ষীদের জবানবন্দি নিতে হবে।
- অভিযুক্তকে অভিযোগকারী ও তাঁর সাক্ষীদের জেরার সুযোগ দিতে হবে।
- অভিযুক্ত ব্যক্তিকে আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য প্রস্তুতির পর্যাপ্ত সুযোগ ও সময় দিতে হবে।
- অভিযুক্ত ব্যক্তিকে আত্মপক্ষ সমর্থনে নিজ পছন্দ মোতাবেক বিজ্ঞ আইনজীবী নিয়োগের এবং পরামর্শ গ্রহণের সুযোগ দিতে হবে।
- আত্মপক্ষ সমর্থনে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে সাক্ষ্য ও সাক্ষী উপস্থাপনের সুযোগ দিতে হবে।
কিন্তু ভ্রাম্যমাণ আদালত আইনটি পুরোপুরি বিচার বিশ্লেষণে দেখা যায় যে, ওই আইন ওপরে বর্ণিত সব নীতিমালা উপেক্ষা করে সরকারের একটি বিশেষ শ্রেণীর কর্মকর্তাদের খুশি করার জন্য ঝটপট আলোচ্য আইনটি প্রণয়ন করে। কিন্তু একটি কথা ভুলে গেলে চলবে না যে ইতিহাসের কোনো আইন মানবতা বিমুখ হয়ে দীর্ঘদিন টিকে থাকতে পারি।
কগনিজেন্স পাওয়ার মানে অপরাধ আমলে নেওয়ার ক্ষমতা। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রায়ে বলা আছে, কগনিজেন্স পাওয়ার একটি বিচারিক ক্ষমতা। এটা সর্বতোভাবেই বিচার-প্রক্রিয়ার অংশ। সাবেক প্রধান বিচারপতি মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান, বিচারপতি এ টি এম আফজাল, বিচারপতি মোস্তাফা কামাল ও বিচারপতি লতিফুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ সর্বসম্মতভাবে ওই অভিমত দেন। তাহলেই প্রশ্ন, ডিসিরা ও তাঁদের অধীন নির্বাহী হাকিমরা কি বিচারক? ওঁরা বিচারক না হলে ওঁদের বিচারিক প্রক্রিয়ায় ঢুকতে দেওয়া হবে কেন?
ডিসিদের কগনিজেন্স পাওয়ার দেওয়া হলে দেশে রাতারাতি একটি ব্যাপকভিত্তিক সমান্তরাল বিচার বিভাগের জন্ম নেবে। মুহূর্তেই দেশের আদালতপাড়ার চিত্র বদলে যাবে। খুনখারাবি, রাহাজানি, ছিনতাই, টেন্ডার-সন্ত্রাস কিংবা বাড়ি দখল অপরাধ যতই জঘন্য হোক, ডিসিরা এ-সংক্রান্ত অভিযোগ, মামলা ইত্যাদি আমলে নিতে শুরু করবেন। এর সবচেয়ে বড় মজা ও মওকা হবে জামিন দেওয়া। মন্ত্রীদের টেলিফোনে কত দিন তাঁর জামিন প্রদানের সুখবঞ্চিত!
বিচারের জন্য প্রস্তুত বা রেডি ফর ট্রায়াল বলে একটা কথা আছে। ওই ৪ উপধারা বলেছে, নির্বাহী হাকিমরা শুধু বিচারের জন্য কোনো মামলা বিচারিক হাকিমদের কাছে পাঠাবেন। এর আগেই অনেকগুলো পর্যায় পেরোতে হয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে তদন্ত ও জামিন। একই সঙ্গে একই ক্ষমতা দেশের বিচারিক আদালতগুলোরও থাকবে। সুতরাং, পুলিশ ও টাউটরা মিলে একই মামলা দায়েরের ক্ষেত্রে ডিসি অফিস ও আদালত চত্বর দুই স্থানে লাইন লাগাবে। যেখানে সুবিধা পাবে, সেখানে তারা মামলা ঠুকতে পারবে। মামলার সংশ্লিষ্ট পক্ষরা এখন সাত ঘাটের পানি খেলে তখন খাবে চৌদ্দ ঘাটে।
আমরা অবশ্যই মনে রাখব, বিচার বিভাগ পৃথক্করণ হওয়া সত্ত্বেও আদালত থেকে দেশের মানুষ ন্যায়বিচার পাচ্ছে এমন আস্থা জনমনে সৃষ্টি হয়নি। সে জন্য যথা ওষুধ লাগবে। বিচার-বস্ত্র ডিসিদের হরণ করতে দেওয়া যাবে না। ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীদের আগ্রহ কিংবা সংবেদনশীলতা বিবেচনায় নিলে দেখা যায়, তাঁদের আগ্রহের মামলাগুলো থেকে তাঁদের সন্তুষ্টি অনুযায়ী তাঁরা আদালতে বেশ প্রতিকার পান। একইভাবে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীরা তাঁদের সন্তুষ্টি অনুযায়ী অনেক কম প্রতিকার পান। এ অবস্থায় যখন আমরা বিচার বিভাগের কার্যকর স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠার দাবি তুলছি, তখন আমলাতন্ত্রের নেতৃত্বে আরেকটি সমান্তরাল বিচারব্যবস্থা সৃষ্টি করার পাঁয়তারা শুরু হয়েছে।
পৃথিবীতে এমন কোন সভ্যতা খুঁজে পাওয়া যাবেনা যেখানে আইনের বিকাশ হয়নি। সভ্যতা বিকাশের সাথে সাথে আইন ধারনাটিরও ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে। পরিবর্তিত সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে না পারলে আইন তার কার্যকারীতা হারায়। প্রয়োজন হয় সে আইনকে সময় উপযোগী করে তোলা। গঠনমূলক সমালোচনার মধ্যেই আইন তার অস্তিত্বের সন্ধান পায়। কিন্তু দুঃখের সাথে বলতে হয়, আমাদের পুরো আইনব্যবস্থায় রয়েছে বৃটিশদের শঠতার ছোঁয়া। কারণ বৃটিশ তাদের দুষ্কর্ম ঢাকতে আইন ব্যবস্থার প্রবর্তন করেন। তৎকালীন ভারতবর্ষের গভর্ণর জেনারেল ১৭৭২ সালে আইন ব্যবস্থার গোড়াপত্তন করে তিনিই সর্বপ্রথম আইন ভঙ্গ করেন। তার অধস্থন কর্মচারী জার্মান চিত্রশিল্পীর পরমা সুন্দরী স্ত্রীকে দাঁড়িপাল্লায় বসিয়ে স্বর্ণের দামে খরিদ করেছিলেন। আজকের আদালতে ব্যবহৃত ন্যায় বিচারের প্রতীক দাঁড়িপাল্লাকে তিনিই প্রথম অনৈতিক কাজে ব্যবহার করেন। মূলত বৃটিশ আইন তৈরী করেছিল শাসন শোষনের জন্য, দরিদ্র কৃষকের জমির খাজনা আদায়ের জন্য কিংবা প্রজাকে কাচারীতে ধরে নিয়ে মারধর, হাত-পা বেঁধে আঁধার কুঠুরিতে ফেলে রাখা, প্রজার স্ত্রী-কন্যাকে বন্ধক হিসেবে আটক রাখা, বিষয় সম্পত্তি ক্রোক করা এবং ভিটেমাটি থেকে উচ্ছেদ করা। বাংলাদেশের আইন ব্যবস্থা এখনও তার উত্তরাধিকার বহন করছে মাত্র।
সিরাজ প্রামাণিক: বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী, আইনগ্রন্থ প্রণেতা ও সম্পাদক-প্রকাশক ‘দৈনিক ইন্টারন্যাশনাল’। ই-মেইল: seraj.pramanik@gmail.com