ভারতীয় সংবিধানের ১৯ নম্বর অনুচ্ছেদে যে বাকস্বাধীনতা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার অধিকারের কথা বলা হয়েছে, তা শর্তহীন নয় বলে জানিয়ে দিল বম্বে হাইকোর্ট।
হাইকোর্টের বিচারপতি এস এস শিন্দে এবং বিচারপতি এম এস কারনিকের বেঞ্চ শুক্রবার (১১ সেপ্টেম্বর) জানায়, বাকস্বাধীনতা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার অধিকারকে সাংবিধানিক মাপকাঠিতে বিচার করা যায়।
মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে এবং তাঁর ছেলে তথা শিবসেনার মন্ত্রী আদিত্যের বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়ায় কুরুচিকর মন্তব্য করার অভিযোগে পালঘর জেলার এক মহিলার বিরুদ্ধে পুলিশ মামলা দায়ের করে। নিম্ন আদালতে তদন্তে সহযোগিতায় প্রতিশ্রুতি দিয়ে জামিন নিলেও তিনি তা পালন করেননি বলে পুলিশের অভিযোগ। গ্রেফতারি এড়াতে ওই মহিলা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। কিন্তু দুই বিচারপতির বেঞ্চ সেই আর্জি খারিজ করে দিয়েছে।
রাজ্য সরকারের তরফে আদালতকে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়, দু’সপ্তাহের মধ্যে অভিযুক্ত মহিলাকে গ্রেফতার করা হবে না। তবে সরকারি কৌঁসুলি জানিয়েছেন, পালঘর জেলার তুলিঞ্জ এবং মুম্বইয়ের আজাদ ময়দান থানায় হাজির হয়ে তদন্তে সহযোগিতা করতে হবে অভিযুক্তকে।
হাইকোর্ট জানিয়েছে, পুলিশ পক্ষপাত দেখালে অভিযুক্ত ফের আদালতের দ্বারস্থ হতে পারবেন।
ভারতীয় সংবিধানের ১৯ থেকে ২২ নম্বর অনুচ্ছেদে মৌলিক অধিকারের মধ্যে ৬ ধরনের স্বাধীনতার কথা বলা হয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম বাকস্বাধীনতা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা।
প্রসঙ্গত, ১৯৯৪ সালে মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধীকে নিয়ে অশালীন ও কুরুচিকর প্রবন্ধ ছাপার অভিযোগে বম্বে হাইকোর্টে মামলা হয় এক পত্রিকার সম্পাদক ও সংশ্লিষ্ট প্রবন্ধ লেখকের বিরুদ্ধে।
তখনও বম্বে হাইকোর্ট জানিয়েছিল, বাকস্বাধীনতা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার অধিকার নিরঙ্কুশ নয়। সেই রায় চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যান পত্রিকার সম্পাদক। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টও হাইকোর্টের রায় সমর্থন করে বলেছিল, ভাবনাচিন্তা প্রকাশেরও সীমা রয়েছে।
সম্প্রতি আদালত অবমাননায় অভিযুক্ত আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণের ‘মতপ্রকাশের স্বাধীনতার অধিকার’ সংক্রান্ত যুক্তিও খারিজ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। সূত্র- আনন্দবাজার পত্রিকা