লালমনিরহাট কারাগারে থাকা জঙ্গিদের ছিনিয়ে নেওয়ার হুমকি দেওয়ার পর সারা দেশের কারাগারগুলোয় সতর্কতা জারি করেছে কারা অধিদপ্তর। যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় স্ট্রাইকিং ফোর্স গঠনের নির্দেশ দিয়ে কারাগারগুলোয় কেন্দ্র থেকে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
অতিরিক্ত কারামহাপরিদর্শক কর্নেল মো. আবরার হোসেন গণমাধ্যমকে এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক ও জেল সুপারের কাছে উড়োচিঠি ও ফোন এসেছিল। এরই পরিপ্রেক্ষিতে কারাগারগুলোতে বাড়তি সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
তিনি বলেন, কারা কর্মকর্তা ও রক্ষীদের সমন্বয়ে স্ট্রাইকিং ফোর্স গঠন করার নির্দেশ দিয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। কোনো হামলা হলে দ্রুত যেন তাঁরা প্রতিহত করতে পারেন, সে জন্য মহড়া করার কথা বলা হয়েছে চিঠিতে।
এ বিষয়ে জানতে লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক মো. আবু জাফর বলেন, দিন সাতেক আগে ডাকযোগে তাঁর কাছে একটি চিঠি আসে। ওই চিঠিতে বলা হয়, কারাগারে তাঁদের সঙ্গী-সাথিদের তাঁরা ছিনিয়ে নেবেন। কিছুতেই আর তাঁদের ঠেকানো যাবে না। এরপর শনিবার একটি অচেনা মুঠোফোন নম্বর থেকে ফোন আসে। সেখানে আবারও একই হুমকি দেওয়া হয়।
কোন জঙ্গি সংগঠন থেকে এই হুমকি দেওয়া হয়েছে, কাদের ছিনিয়ে নেওয়ার কথা বলা হচ্ছে, সে বিষয়ে কারা অধিদপ্তর বা জেলা প্রশাসন কোনো মন্তব্য করেনি। জেলা প্রশাসক বলেছেন, এ ঘটনার তদন্ত হচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে লালমনিরহাটের জেল সুপার কিশোর কুমার নাগের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে ময়মনসিংহের ত্রিশালে প্রিজন ভ্যানে হামলা চালিয়ে নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) তিন সদস্য ছিনিয়ে নেয় জঙ্গিরা। তাঁদের একজন সালাউদ্দীন সালেহীন এখন ভারত থেকে পুরোনো জেএমবির নেতৃত্বে দিচ্ছেন।
এরপর ২০১৭ সালে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের টঙ্গী সরকারি কলেজ গেট এলাকায় দুটি প্রিজন ভ্যানে হামলা চালিয়ে মুফতি হান্নানকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চালিয়েছিলেন তাঁর অনুসারীরা। গুলশানের হোলি আর্টিজানে হামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা হুমায়ূন কবীরকেও জঙ্গিরা কারাগার থেকে বিভিন্ন সময় হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ আছে।