ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল: বেওয়ারিশ কুকুর অবশ্যই একটি সমস্যা। ঢাকা চট্টগ্রাম শহরগুলোতে বেওয়ারিশ কুকুরের উপদ্রব বেড়েছে কারণ এদের নিধন করা যায় না আইনের কারণে। সেটা অবশ্যই ঠিক আছে। তবে পৃথিবীর কোনো উন্নত দেশে, এমনকি আমাদের মানের দেশ গুলোতেও, যতই প্রাণী অধিকারের ব্যাপারে সোচ্চার হোন না কেন তারা, পারতপক্ষে বেওয়ারিশ কুকুর রাস্তায় ঘুরতে দেয় না কেউ, ডগ শেল্টারে স্থানান্তর করে৷
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন কুকুরদের স্থানান্তর করছে, নিধন করছে না। একটি পক্ষ এর ঘোরতর বিরোধী। এদের বেশিরভাগই গাড়ি নিয়ে রাস্তায় চলাফেরা করে, সাধারণ মানুষের কষ্ট বোঝার ইচ্ছা এদের নেই। এসি রুমে বসে ফেসবুকে দিলাম এক প্রাণী অধিকারের স্ট্যাটাস, ঘরের কাজের লোকের বেতন দেয়ার সময় আবার বাজারের রেটের বেশি এক টাকাও না!
আরেক পক্ষ রাগ বা ক্ষোভের বশবর্তী হয়ে নিধন চান, এটি নিঃসন্দেহে একটি হিংস্র মনোভাব। তবে মানবিকভাবে কুকুর স্থানান্তর করার ক্ষেত্রে আইনের জটিলতা থাকা উচিৎ নয়। আইন অনুযায়ী অপসারণও যদি সম্ভব না হয়, তাহলে আইন সংশোধন করা যেতে পারে।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বাস্তবতা মেনে এর যৌক্তিক সমাধান দরকার। সাধারণ পথচারিরা বারংবার আক্রান্ত হচ্ছেন, এত মানুষকে ভোগান্তি পোহাতে হয়। পৃথিবীর কোনো সভ্য দেশে বেওয়ারিশ কুকুর সেটি ভেক্সিন দেয়া থাকুক আর নাই থাকুক, রাস্তায় ঘুরতে দেয়া হয় না। আমরা এত বেশি অধিকার সচেতন!
কুকুরের অধিকার আছে সন্দেহ নাই, সাধারণ মানুষেরও অধিকার আছে রাস্তাঘাটে নির্ভয়ে চলাচল করার। এজন্য অন্তত স্থানান্তর করতে দেয়া উচিত। নয়ত যারা এর বিরোধীতা করছেন তারা ঘরে পোষা প্রাণী হিসেবে রাখতে পারেন। বহু দেশে বেওয়ারিশ কুকুরের শেল্টার থেকে ঘরে পোষা প্রাণী হিসেবে নিতে দেয়া হয়। এটা একটি সমাধান হতে পারে। এ বিষয়ে আবেগী হওয়ার চাইতে বাস্তবতা মেনে নেওয়া উচিত।
ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল: শিক্ষা উপমন্ত্রী এবং আইনজীবী, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট।