সাধারণত কোন ব্যক্তিকে গ্রেফতারের পর পুলিশ ফরোয়ার্ডিং লেটারসহ ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে সোপর্দ করা হয়। কিন্তু প্রায়শই দেখা যায় ওই পুলিশ ফরোয়ার্ডিং লেটারে গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিকে গ্রেফতারের সময় ও তারিখ যথাযথভাবে উল্লেখ করা হয় না। এমতাবস্থায় কোন ব্যক্তিকে গ্রেফতার করার পর আদালতে হাজির করার সময় পুলিশের ফরোয়ার্ডিং লেটারে (চালানপত্রে) উক্ত ব্যক্তিকে গ্রেফতারের সময় এবং তারিখ উল্লেখ করার নির্দেশ জারি করা হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের কার্যালয় থেকে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও জাস্টিস অব দি পিস ফারহানা ফেরদৌস গত বৃহস্পতিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) ফৌজদারি কার্যবিধির ২৫ ধারা অনুবলে এ আদেশ জারি করেন।
অফিস আদেশে বলা হয়, সংবিধানের ৩৩ অনুচ্ছেদ ও ফৌজদারি কার্যবিধি ১৮৯৮-এর ৬১ ধারার বিধান অনুযায়ী গ্রেপ্তারকৃত যে কোন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারের সময় থেকে চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে (গ্রেপ্তারের স্থান থেকে ম্যাজিস্ট্রেটের সম্মুখে হাজির করার সময় ব্যাতিরেকে) নিকটতম ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে হাজির করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কিন্তু পুলিশের চালানপত্রে গ্রেফতারের তারিখ এবং সুনির্দিষ্ট সময় উল্লেখ না থাকায় গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিকে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে হাজির করা হয়েছে কি-না তা গণনা করা সম্ভব হয়না।
ফলে আদালতে এসে বিচারপ্রার্থী জনগণ ও আইনজীবীরা প্রশ্ন উত্থাপন করেন। প্রকৃতপক্ষে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিকে ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে উপস্থিত না করা দেশের সংবিধান ও প্রচলিত আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। এমতাবস্থায় প্রতিটি ফরোয়ার্ডিং লেটারে কোন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারের পর গ্রেফতারের সময় এবং তারিখ উল্লেখ করার নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে বলে আদেশে বলা হয়।
এছাড়া তদন্ত পর্যায়ে বিভিন্ন মামলার জখমী সনদপত্র, জব্দ তালিকা, এজাহার এবং অন্যান্য কাগজাদী এমনকি অভিযোগপত্রের ফটোকপি সংশ্লিষ্ট পক্ষ বা আইনজীবীর কাছে আইন বহির্ভূতভাবে প্রদান করা হয়ে থাকে। তদন্তকালীন সময়ে তদন্তকারী কর্মকর্তা আইনত শুধুমাত্র সংশ্লিষ্ট ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে তদন্ত বিষয়ে দায়বদ্ধ থাকেন। তদন্ত প্রতিবেদন বা মামলা সংশ্লিষ্ট জখমী সনদপত্র বা অন্য যে কোন কাগজপত্র আদালতের অনুমতি সাপেক্ষে প্রচলিত বিধান অনুযায়ী নির্দিষ্ট কোর্ট ফি এবং অন্যান্য খরচা প্রদান সাপেক্ষে জাবেদা নকল পেতে পারেন। অথচ প্রায়শই সংশ্লিষ্ট পক্ষদের কাছে আদালতে দাখিলের পূর্বেই এসব পাবলিক ডকুমেন্টের ফটোকপি সরবরাহ করা হয়ে থাকে। যা প্রচলিত আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
এমতাবস্থায় মামলা সংশ্লিষ্ট কোন ডকুমেন্ট (নথি) প্রদানের ক্ষেত্রে যথাযথ বিধি অনুসরণের জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। ইচ্ছাকৃতভাবে কোন ব্যক্তি বা পক্ষ উপরোক্ত আদেশ অমান্য করলে আইনি ও বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে।
এর আগে, গত ২২ সেপ্টেম্বর ঝিনাইদহ চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের কার্যালয় থেকে একই ধরণের আদেশ জারি করা হয়েছে। ঝিনাইদহ চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও জাস্টিস অব দি পিস মুহাঃ হাসানুজ্জামান উক্ত আদেশ জারি করেন।
আরও পড়ুন: গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে হাজির না করলে আইনি ব্যবস্থা