ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে জন্ম নেয়া শিশুকে মৃত ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা পর কবরস্থানে নড়েচড়ে ওঠার ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন করা হয়েছে।
আজ রোববার (১৮ অক্টোবর) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আসাদ উদ্দিনসহ ১০ আইনজীবীর পক্ষে অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির এই আবেদন করেন।
রিটে এ ঘটনায় সংশ্লিষ্টদের চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ তুলে জড়িতদের বিরুদ্ধে কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে না-এই মর্মে রুল চাওয়া হয়েছে।
এর আগে, গত বুধবার (১৪ অক্টোবর) ৬ মাস ১৬ দিনের অন্তঃসত্ত্বা অসুস্থ স্ত্রীক শাহিনুর বেগমকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে আসেন নবজাতকটির বাবা বাসচালক ইয়াসিন। তাকে গাইনি বিভাগের ২১২ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়।
চিকিৎসকরা জানান, রোগীর প্রেশার অনেক হাই। বাচ্চাটি ডেলিভারি না করালে তার প্রেশার কমবে না। চিকিৎসকদের কথায় সম্মতি দেয়ার পর ওইদিন রাতেই তাকে লেবার রুমে নিয়ে নরমাল ডেলিভারির চেষ্টা করা হয়। ডেলিভারি না হওয়ায় তাকে ১১০ নম্বর ওয়ার্ডে রাখা হয়। সেখানে চিকিৎসকরা দুইদিন চেষ্টার পর গতকাল ভোরে তার আবার ব্যথা শুরু হয়। এরপর ভোর পৌনে ৫টার দিকে তার স্ত্রী এক কন্যাসন্তান প্রসব করেন।
চিকিৎসকরা জানান, বাচ্চাটি মৃত অবস্থায় হয়েছে। এরপর হাসপাতালের আয়া মৃত বাচ্চাটিকে প্যাকেট করে বেডের নিচে রেখে দেন এবং কোথাও নিয়ে দাফন করার জন্য বলেন।
সকাল ৮টার দিকে নবজাতকটির বাবা ইয়াসিন নবজাতককে দাফন করার জন্য আজিমপুর কবরস্থানে নিয়ে যান। সেখানে এক হাজার ৫০০ টাকা সরকারি ফি দিতে না পারায় তাদের পরামর্শে রায়েরবাজার বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে নিয়ে যান। সেখানে ৫০০ টাকা ফি ও কিছু বকশিস দেয়ার পর মৃত নবজাতকটির জন্য কবর খোঁড়া শুরু হয়।
কবর খোঁড়ার প্রায় শেষ পর্যায়ে শিশুর কান্নাকাটির শব্দ শুনতে পান। তিনি আশপাশে কোথাও কিছু না পেয়ে পরে পাশে রাখা নবজাতকটির দিকে খেয়াল করেন। এরপর প্যাকেট খুলে দেখেন বাচ্চাটি নড়াচড়া ও কান্নাকাটি করছে। পরে নবজাতককে দ্রুত আবার ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় এবং চিকিৎসকরা দেখে নবজাতক বিভাগে ভর্তি করেন।
ইয়াছিন-শাহিনুর দম্পতির এটি দ্বিতীয় সন্তান। এর আগে তার ১০ বছরের ইসরাত জাহান নামে আরেকটি মেয়ে আছে। তাদের বাড়ি গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার মালঙ্গা গ্রামে। তুরাগ ধউর নিসাতনগর এলাকায় থাকেন তারা। শাহিনুর বেগম পেশায় একজন গৃহিণী ও ইয়াছিন বিআরটিসির বাসচালক।