বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতে সংবাদ প্রচারের ক্ষেত্রে বিভিন্ন অংশে বাণিজ্যিক বিজ্ঞাপন প্রচারের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে হাইকোর্টের দেয়া আদেশ স্থগিত করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
এ সংক্রান্ত এক আবেদনের ওপর শুনানি নিয়ে আজ রোববার (১৮ অক্টোবর) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের ভার্চ্যুয়াল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মাসুদ আহমেদ সাঈদ। বিটিআরসির পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার খোন্দকার রেজা-ই রাকিব। অন্যদিকে চ্যানেল আইয়ের পক্ষে ছিলেন এ এম আমিন উদ্দিন, চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের পক্ষে ছিলেন মো. আসাদুজ্জামান এবং দীপ্ত টিভির পক্ষে অ্যাডভোকেট মুরাদ রেজা।
বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে সংবাদ প্রচারের সময় বিভিন্ন অংশে বাণিজ্যিক কোম্পানির স্পন্সর করে বিজ্ঞাপন প্রচারে নিষেধাজ্ঞা জারি করে ২০১৯ সালের ৬ মে আদেশ দেন হাইকোর্ট।
এ আদেশের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল দায়ের করে চ্যানেল আই, চ্যানেল টোয়েন্টিফোর ও দীপ্ত টিভি। আপিল বিভাগ তাদের আবেদন মঞ্জুর করে হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা স্থগিত করে আদেশ দেন।
চ্যানেল আইয়ের পক্ষের আইনজীবী এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, ১৯৫২ সালের বিজ্ঞাপন সংক্রান্ত যে আইন আছে, আমরা আদালতের কাছে তা তুলে ধরেছি। আদালত এসব বিষয় বিবেচনা করে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করেছেন।
অ্যাডভোকেট আমিন উদ্দিন জানান, আমরা আদালতের কাছে বলেছি, টেলিভিশনগুলোর আয়ের উৎস তাদের বিজ্ঞাপন। এখন এটা যদি বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে অনেক টিভি চ্যানেলই টিকে থাকতে পারবে না। তারা এ আয়ের ওপর নির্ভর করেই টিকে থাকে। পরে আদালত এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করেন।
ব্যাংক বাণিজ্য সংবাদ, হাসপাতাল স্বাস্থ্য সংবাদ—এভাবে টাইটেল স্পন্সর করে বিজ্ঞাপন প্রচারে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে ২০১১ সালে হাইকোর্টে রিট করা হয়। এম এ মতিন নামের এক স্কুলশিক্ষক এই রিট দায়ের করেন। রিটে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও আইন মন্ত্রণালয়ের সচিব, সে সময়কার বেসরকারি সব টেলিভিশন চ্যানেলের মালিকসহ মোট ২৪ জনকে বিবাদী করা হয়।
রিটে বলা হয়, এভাবে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে বিজ্ঞাপন নিয়ে সংবাদ প্রচারের সময় ওইসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রচারের ক্ষেত্রে সংবাদের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।
এম এ মতিনের মৃত্যুর পর ফারুক মো. হাসিব নামের এক ব্যবসায়ী ওই রিটে পক্ষভুক্ত হয়ে মামলার কার্যক্রম চলমান রাখেন। পরে ওই রিটের ওপর রুল জারি করেন হাইকোর্ট। রুলের চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে সংবাদ প্রচারের ক্ষেত্রে বিভিন্ন অংশে বাণিজ্যিক বিজ্ঞাপন প্রচারের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে রায় ঘোষণা করেন হাইকোর্ট।