১৯৭১ সালের ৭ মার্চ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঐতিহাসিক ভাষণটি যেভাবে দিয়েছিলেন, সংবিধানে সেই ভাষণের বেশকিছু অংশ সঠিকভাবে আসেনি বলে আদালতে একটি রিট আবেদন করা হয়েছে। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী, ৭ মার্চের সঠিক ভাষণটি খুঁজতে কমিটি গঠন করা হয়েছে।
গত ৬ অক্টোবর কমিটি গঠন করে আদেশ জারি করে তথ্য মন্ত্রণালয়। কমিটিকে এক মাসের মধ্যে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।
সাত সদস্যের এই কমিটির সভাপতি বাংলাদেশ টেলিভিশনের মহাপরিচালক। প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের (পিআইবি) মহাপরিচালক কমিটিতে সদস্য সচিবের দায়িত্ব পালন করবেন।
এছাড়া কমিটিতে সদস্য হিসেবে রয়েছেন- চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদফতরের (ডিএফপি) মহাপরিচালক, বাংলাদেশ বেতারের মহাপরিচালক, বাংলা একাডেমির সভাপতি অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান, বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ ও সাহিত্যিক ড. মুনতাসীর উদ্দিন খান মামুন এবং বাংলাদেশ বেতারের সাবেক উপ-মহাপরিচালক আশফাকুর রহমান খান।
আদালতের রিট পিটিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী কমিটিকে প্রয়োজনীয় দলিলপত্রাদি, তৎকালীন প্রকাশিত ও প্রচারিত পত্রিকা এবং অডিও ভিজ্যুয়াল ফুটেজ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে দেয়া প্রকৃত ঐতিহাসিক ভাষণটি নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।
সংবিধানে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের কিছু শব্দ চয়ন, বাক্য ও বাক্যের গঠন ভুলভাবে উপস্থাপনসহ কিছু শব্দ বাদ দেয়ায় কর্তৃপক্ষের ব্যর্থতা চ্যালেঞ্জ করে গত ৫ মার্চ উচ্চ আদালতে রিট আবেদন করা হয়। রাজবাড়ীর রায়নগর গ্রামের কাশেদ আলী নামের এক ব্যক্তির পক্ষে হাইকোর্টে আইনজীবী সুবীর নন্দী দাস এ আবেদনটি করেন।
রিটকারী আইনজীবীর বক্তব্য অনুযায়ী, বঙ্গবন্ধু তার ঐতিহাসিক ভাষণ যেভাবে দিয়েছিলেন সংবিধানে সেই ভাষণের বেশকিছু অংশ সঠিকভাবে আসেনি। সংবিধানে ভাষণের অনেক জায়গায় শব্দ চয়ন, বাক্য, বাক্যের গঠন ভুলভাবে উপস্থাপনসহ কিছু শব্দ বাদ দেয়া হয়েছে।
উদাহরণস্বরূপ ওই আইনজীবী উল্লেখ করেন, বঙ্গবন্ধু তার ভাষণে ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, রংপুর বলেছিলেন। কিন্তু সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত সেই ভাষণে খুলনা শব্দটি নেই।
তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন ‘জনগণের প্রতিনিধির কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে’। কিন্তু সংবিধানে লেখা আছে ‘হাতে’। বঙ্গবন্ধু ভাষণে দুবার বলেছিলেন, ‘এবারের সংগ্রাম, মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ কিন্তু সংবিধানে এই বাক্যটি একবার লেখা হয়েছে।
সুবীর নন্দী দাস বলেন, এ ধরনের প্রায় অর্ধশতাধিক শব্দ চয়ন, বাক্য ও বাক্যের গঠন ভুলভাবে সংবিধানে উপস্থাপন করা হয়েছে।