সুনামগঞ্জে নবনির্মিত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবনে যাওয়ার রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে গাড়ি রাখার গ্যারেজ নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ আব্দুল আহাদের বিরুদ্ধে।
সুনামগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতি মঙ্গলবার (২৪ নভেম্বর) বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের একটি ভবনেই শুরু থেকে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের কার্যক্রম চলছে। বিভিন্ন সময় আইনজীবীরা আদালতের জন্য আলাদা ভবন নির্মাণের দাবি জানান।
এরপর ২০১৬ সালে ১০তলা এই ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়। এটি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের পাশেই নির্মাণ করা হচ্ছে। ভবনে যাওয়ার রাস্তা নকশায় উল্লেখ আছে।
কিন্তু গত বছর নকশায় থাকা রাস্তার ওপর একটি সরকারি গোদাম নির্মাণে কাজ শুরু হয়। আইনজীবীরা বাধা দেন। এরপর আদালতে এ নিয়ে একটি মামলা হলে আদালত সেখানে স্থিতাবস্থা জারি করেন। এখন আবার সেখানে গাড়ির গ্যারেজ নির্মাণ করা হয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে সোমবার (২৩ নভেম্বর) জেলা আইনজীবী সমিতির জরুরি সাধারণ সভা হয়েছে। এতে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদকে সুনামগঞ্জ থেকে প্রত্যাহারের দাবি জানানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।
এ ছাড়াও তার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননা মামলা দায়ের, বিভিন্ন চিঠিতে আইনজীবী সমিতিকে নিয়ে কটাক্ষ করায় কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়।
পাশাপাশি বিষয়টি প্রধান বিচারপতি, পরিকল্পনামন্ত্রী, আইনমন্ত্রী, জনপ্রশাসনমন্ত্রীসহ সুনামগঞ্জের সব এমপিদের অবহিত করার সিদ্ধান্ত হয়।
একইসঙ্গে এ অন্যায়ের প্রতিবাদে আজ বুধবার (২৫ নভেম্বর) আইনজীবী সমিতি ভবনের সামনের সড়কে আইনজীবীরা মানববন্ধন করবেন বলেও সমিতির সভায় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনের জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি মো. আপ্তাব উদ্দিন বলেন, এই আদালত ভবন যেমন আইনজীবীরা ব্যবহার করবে, তেমনি জেলার বিচারপ্রার্থী জনগণও ব্যবহার করবে। আমরা বুঝতে পারছি না ডিসি সাহেব কেন রাস্তায় বাধা দিচ্ছেন। এটাতো ভবন নির্মাণের সময়ই নকশা করা।
সংবাদ সম্মেলনের আরও বক্তব্য দেন আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি বজলুল মজিদ চৌধুরী, রবিউল লেইস, সৈয়দ শামসুল ইসলাম, মল্লিক মইন উদ্দিন মো. সোহেল প্রমুখ।
এদিকে এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ গণমাধ্যমকে বলেন, এটা আমার ব্যক্তিগত বিষয় নয়। এ নিয়ে আমি বিজ্ঞ আইনজীবীদের সঙ্গে একাধিকবার কথা বলেছি। কিন্তু সমাধান হয়নি।
তিনি কখনোই কাউকে অপমান করেননি মন্তব্য করে বলেন, ভবনে যাওয়ার রাস্তার নকশায় পরিবর্তন করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের কার্যালয়ের সীমানাপ্রচীর অপসারণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। অথচ আমরা এসবের কিছুই জানি না।
জেলা প্রশাসক জানান, আমি আমার দায়িত্ব থেকে সার্বিক বিষয়ে মন্ত্রী পরিষদ বিভাগকে অবহিত করেছি। এখন সেখান থেকে যে সিদ্ধান্ত আসবে সেটাই হবে। এখানে কারও সঙ্গে কোনো বিরোধ নেই।