চলতি বছরের রিটার্ন দাখিলের সময় বাড়ানো হবে না বলে জানিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা রহমাতুল মুনিম।
আজ রোববার (২৯ নভেম্বর) এনবিআরের সম্মেলন কক্ষে ‘মাসব্যাপী কর সেবাদান এবং ৩০ নভেম্বর জাতীয় আয়কর দিবস-২০২০ উদযাপন’ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় এনবিআরের চেয়ারম্যান বলেন, ২৬ নভেম্বর পর্যন্ত রিটার্ন জমা হয়েছে ১৩ লাখ ২০ হাজার। পরিশোধিত কর ২ হাজার ৩৮৭ কোটি টাকা। তবে, আমাদের সক্ষমতা বাড়লেও কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় আয়করের ক্ষেত্র এখনও বাড়েনি।
আবু হেনা রহমাতুল মুনিম বলেন, রিটার্ন জমা দেওয়ার শেষ সুযোগ থাকছে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত। নির্ধারিত সময়ে যারা আয়কর রিটার্ন দিতে পারবেন না, তারা সংশ্লিষ্ট কর অফিসে আবেদন করতে পারবেন। তবে দুই শতাংশ জরিমানা বিষয়টি বাধ্যতামূলক নয়।
তিনি বলেন, গ্রাহক সঠিক সময়ে কেনো রিটার্ন জমা দিতে পারেনি। তার যৌক্তিক কারণ দেখালে জরিমানা মওকুফ করা হবে। কমিশনারের কাছে যদি কারণ যৌক্তিক মনে না হয়, তবে গ্রাহককে জরিমানা দিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, টিআইএনধারীদের রিটার্ন দেওয়া বাধ্যতামূলক, না দিলে জরিমানা গুনতে হবে।
আয়কর আইনানুযায়ী উপকর কমিশনার করদাতার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে রিটার্ন জমা দুই মান সময় দিতে পারে। তবে করদাতাকে দুই শতাংশ হারে জরিমানা দিতে হবে।
করোনা ভাইরাসের (কোভিড-১৯) জন্য অনেক করদাতা সময় মতো কর দিতে পারেননি, তারা সময় বাড়ানোর দাবি করছেন এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, দুর্যোগময় পরিস্থিতি বেশি দিন দীর্ঘস্থায়ী হয় না। তবে, কোভিড-১৯ এবছর হয়েছে। এটি একটি অসুখ হিসেবে বিশ্ব একবছর মেনে নিয়েছে। তবে, আমাদের কার্যক্রম কিন্তু বন্ধ হয়নি। ব্যবসা থেকে দৈনন্দিন কার্যক্রম সবই চলছে। যদিও একটু অসুবিধা হচ্ছে। সে কারণে রিটার্ন জমা দেওয়া নিয়ে কোনো বিশেষ প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়েছে বলে আমরা মনে করছি না। ক্ষেত্র বিশেষে এ ধরনের সমস্যায় যদি কেউ পড়ে তাহলে তাদের জন্য আলাদা নিয়ম রয়েছে। তারা আবেদন করতে পারবেন কমিশনারের কাছে। কমিশনারকে বলা হয়েছে যত আবেদন পাবে সময় দিয়ে দেবেন। তবে, জরিমানা মেন্ডটরি নয়। সেটা কমিশনারের ওপর নির্ভর করা হবে। তবে, সময় বাড়ানোর ক্ষেত্রে জরিমানার বিষয়টি নমনীয়ভাবে দেখা হয়।
তিনি বলেন, যারা আগে রিটার্ন জমা দিয়েছেন, বা টিআইএনধারি রিটার্ন জমা দেননি তাদের একটা বিরাট অংশ মনে করবে রিটার্ন জমা দেবেন না। এরপর যখন নোটিশ যাবে জরিমানা হবে, তখন ঠিকই মনে করবে। কিন্তু তাদের জন্য সময় বাড়িয়ে লাভ নেই। নিয়ম অনুযায়ী আইনে যা আছে রিটার্ন জমা না দিলে তাই হবে।
এর আগে এমনটা হয়নি, এবারইতো আমরা বাধ্যতামূলক করেছি। সময় বৃদ্ধি নিয়ে যথেষ্ট হয়েছে। এবছর আর সে সুযোগ দিতে চাই না।
রিটার্ন জমার প্রক্রিয়া সহজ করা হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, রিটার্ন সহজ করার চিন্তা করা হচ্ছে। এবার যারা রিটার্ন দেবে তাদের জন্য এক পাতার আবেদন ফরম করা হয়েছে। আর সঠিক কর দেওয়া কিভাবে সবাইকে আনা যায় সেটা করা হচ্ছে।
চেয়ারম্যান আবু হেনা রহমাতুল মুনিম বলেন, আমাদের মোট টিআইএনধারী করদাতা সংখ্যা ৫০ লাখ ৭২ হাজার ৫৬৭ জন। গত বৃহস্পতিবার (২৬ নভেম্বর) পর্যন্ত দাখিলকৃত রিটার্নের সংখ্যা ১৩ লাখ ২০ হাজার ৮২৫টি। যা গত বছর ছিল ১২ লাখ ৫৭ হাজার ৬২৬টি। আর ওই সময়ে রিটার্নের সঙ্গে পরিশোধিত কর ২ হাজার ৪৮৭ টাকা। যা গতবছর ছিল ৩ হাজার ৫৮০ টাকা।
এতে উপস্থিত ছিলেন এনবিআরের সদস্য (করনীতি) আলমগীর হোসেন, সদস্য অপূর্ব কান্তি দাস, হাফিজ মোরশেদ প্রমুখ।