মানিকগঞ্জের এক টেম্পুচালক হত্যা মামলায় গত ৩০ সেপ্টেম্বর মোকছেদ আলী নামের এক আসামির মৃত্যুদণ্ডের সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মুহাম্মদ ইমান আলীর নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের বেঞ্চ।
রোববার (২৯ নভেম্বর) এ নির্দেশ দিয়ে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। প্রকাশিত পূর্ণাঙ্গ রায়ে যাবজ্জীবনের সীমা নির্ধারণ করে পূর্ণ ব্যাখ্যা দেন আদালত।
রায়ে আদালত বলেছেন, দণ্ডবিধি বা পেনাল কোডের ৪৫ ধারা অনুযায়ী যাবজ্জীবন মানে স্বাভাবিক মৃত্যু পর্যন্ত কারাদণ্ড।
রায় প্রকাশের বিষয়টি নিশ্চিত করে ডেপুটি আ্যটর্নি জেনারেল অমিত দাশ গুপ্ত গণমাধ্যমকে বলেন, গত ৩০ সেপ্টেম্বর মোকছেদ আলীকে যাবজ্জীবন এবং টুটুল নামের আরেক আসামিকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেন আপিল বিভাগের বেঞ্চ। সে রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ করা হয়েছে।
অমিত দাশ গুপ্ত বলেন, মোকছেদ আলীকে দেয়া যাবজ্জীবনের বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছেন আদালত। প্রকাশিত সেই রায়ে উল্লেখ করা হয়, দণ্ডবিধি বা পেনাল কোডের ৪৫ ধারা অনুযায়ী কারাদণ্ড মানে স্বাভাবিক মৃত্যু পর্যন্ত কারাদণ্ড।
উল্লেখ্য, যাবজ্জীবন মানে কতদিনের কারাদণ্ড এ বিষয়ে উদ্ভূত আইনি জটিলতা দূরীকরণে সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এস কে) সিনহার নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ অপর একটি মামলায় যাবজ্জীবন মানে আমৃত্যু কারাদণ্ড বলে রায় দেন।
আলোচিত পূর্ণাঙ্গ রায়ে আদালত বলেন, দণ্ডবিধির ৩০২ ধারা অনুযায়ী দোষী ব্যক্তি মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হবেন, এটাই বিধান। এক্ষেত্রে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডটা হচ্ছে ব্যতিক্রম। যখন এ ধরনের পরিস্থিতিতে কাউকে মৃত্যুদণ্ডের পরিবর্তে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়, তখন এর কারণ অবশ্যই উল্লেখ করতে হয়। দণ্ডবিধির ৫৩ ধারা অনুযায়ী যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের অর্থ ৪৫ ধারার সঙ্গে মিলিয়ে পড়তে হবে। সেক্ষেত্রে দেখা যায়, যাবজ্জীবন মানে আমৃত্যু কারাদণ্ড।
আদালত আরও বলেন, যদি হাইকোর্ট বিভাগ বা এ আদালত (আপিল বিভাগ) মৃত্যুদণ্ডের সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন করেন তখন এবং নির্দেশ দেন যে তার স্বাভাবিক মৃত্যু পর্যন্ত এ কারাদণ্ড ভোগ করবেন, তখন এ ধরনের মামলায় সাজা কমানোর আবেদন গ্রাহ্য হবে না।
তবে উক্ত রায়ের রিভিউ শুনানি শেষে রায়ের জন্য আগামীকাল ১ ডিসেম্বর দিন ধার্য রয়েছে।