আদালতে একজন সাক্ষীকে বিজ্ঞ আইনজীবী জেরা করছেন,’যে সম্পত্তির জন্য মামলা করেছেন এটা কার খরিদ করা?’
– আমার পিতার।
আপনি কতটুকু দাবি করেন?
– ছিয়াত্তর শতক।
এ সম্পত্তি কত সালে খরিদ করা হয়?
-১৯৯৪ সালে।
কত তারিখ বলতে পারবেন?
– জি স্যার পারব। ২৩/৩/৯৪ সালে।
কবলা নম্বর কত?
– ৭৭৮ নং দলিল।
সিএস খতিয়ান নম্বর কত?
– ৭৪
এমআরআর খতিয়ান নম্বর কত?
– ৫৯
আপনার পিতা কবে মারা গেছেন?
– ৩/৪ বছর হবে।
সঠিক সাল বলতে পারবেন?
– সাক্ষী কিছুক্ষণ ভেবে বলল স্যার স্মরণ নাই।
আমি অবাক হয়ে দেখলাম পিতার সম্পত্তির পরিমাণ জানে, দলিলের সন তারিখ জানে, এত পুরনো খতিয়ান নাম্বার জানে শুধু জানে না যে বাবার কষ্টার্জিত সম্পত্তির ভাগ পেতে আদালতে আসেন তার মৃত্যুর সঠিক সাল। সাল যেহেতু মনে নেই মৃত্যুর সুনির্দিষ্ট তারিখ মনে আছে এ আশা করা সমীচীন নয়।
যেখানে বাবার মৃত্যুর দিনই জানে না সেখানে সেদিন পিতার রুহের মাগফেরাত কামনা করে একটু দোয়া করা, মিসকিন খাওয়ানোর কথা ভাবে বলেও সঙ্গত কারণেই মনে হয় না।
আমাদের বাবারা এ ঘটনা থেকে শিক্ষা পাক। সন্তানের জন্য মাথার ঘাম পায়ে ফেলে কিংবা ঘুষ দুর্নীতি করে অন্যের হক মেরে সম্পদের পাহাড় গড়ার আগে ভাবুক তিনি জীবন বাজি রেখে কিংবা কারো কারো বেলায় নৈতিকতা বিসর্জন দিয়ে এ সম্পদ রেখে যাওয়ার আদৌ প্রয়োজন আছে কি না! এ সম্পত্তি আদতেই তার কোন কাজে লাগবে কি না!
কাজী শরীফ: সহকারী জজ, নোয়াখালী।