ভেড়ামারা পৌরসভা নির্বাচনে দায়িত্বরত সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে ‘দুর্ব্যবহার’ করা সেই কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার (এসপি) এস এম তানভীর আরাফাতকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে।
সোমবার (৮ ফেব্রুয়ারি) তানভীর আরাফাতকে বরিশাল মহানগরী পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার হিসেবে নিয়োগ দিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে আদেশ জারি করা হয়েছে।
কুষ্টিয়ার নতুন পুলিশ সুপার নিয়োগ পেয়েছেন বরিশাল মহানগরীর পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার মো. খাইরুল আলম।
কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা পৌরসভা নির্বাচনে ১৪ জানুয়ারি থেকে ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত প্রথম শ্রেণির জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে নিয়োগ পান মো. মহসিন হাসান। এরপর ১৬ জানুয়ারি দায়িত্বপালন অবস্থায় সকাল ১০টায় ভেড়ামারা পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে অবস্থানকালে কুষ্টিয়ার এসপি তানভীর আরাফাত ম্যাজিস্ট্রেট মহসিন হাসানের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন।
এসপি তানভীর আরাফাতের দুর্ব্যবহারের জন্য তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্বাচন কমিশনে চিঠি দেন মহসিন হাসান। দাখিল করা একটি আবেদনের কপি সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল কার্যালয়ে পাঠানো হয়। এর অনুলিপি আইন মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশের আইজির দফতরেও পাঠানো হয়।
মহসিন হাসান অভিযোগে বলেছেন, ‘আমি আমার পরিচয় দিলে এসপি ক্ষিপ্তস্বরে বলেন, ‘আপনি এখানে কী করেন? বেয়াদব, বের হয়ে যান এখান থেকে।’ আমি পুলিশ সুপার ও তার ফোর্সের আক্রমণাত্মক চরম অসৌজন্যমূলক ও মারমুখী আচরণে হতচকিত ও কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে সেখানে দাঁড়িয়ে থাকি। এরপর এসপিসহ তার সঙ্গীয় ফোর্স আমার সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় আমাকে উদ্দেশ্য করে একাধিকবার বলেন, ‘এসব লোককে পাঠায় কে? বেয়াদব ছেলে। এখানে কাজ কী আপনার? বের হয়ে যান এখান থেকে।’
পত্রিকায় এ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশিত হলে তানভীর আরাফাতকে তলব করে হাইকোর্ট। সশরীরে আদালতে উপস্থিত হয়ে এ বিষয়ে কারণ দর্শাতে বলেন দেশের উচ্চ আদালত। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৫ জানুয়ারি এসপি আরাফাত হাইকোর্টে হাজির হন। তিনি আদালত অবমাননার অভিযোগের বিষয়ে অনুতপ্ত হয়ে আদালতের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনার আবেদন করেন।
এসপিকে আদালত অবমাননা থেকে অব্যাহতি দেয়ার জন্য আরজি জানান তার আইনজীবী। শুনানি নিয়ে আদালত আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারি আদেশের জন্য দিন ধার্য করেছেন।