কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারী উপজেলায় রাতে আঁধারে একই পরিবারের চারজনকে কুপিয়ে হত্যা মামলায় ছয় জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
এ চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলায় রায় ঘোষণার পরপরই দণ্ডপ্রাপ্ত উপস্থিত আসামিরা আদালতের কাঠগড়ায় ভাঙচুরসহ বিচারককে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন।
পরে পুলিশ সদস্যরা আসামিদের উশৃঙ্খল আচরণ থেকে নিবৃত করে কারাগারে নিয়ে যান।
মঙ্গলবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে কুড়িগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ আব্দুল মান্নান এ রায় দেন।
হত্যা মামলায় সাত আসামির মধ্যে একজনকে খালাস দিয়েছেন আদালত। এছাড়াও মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত এক আসামি বর্তমানে পলাতক রয়েছেন।
মামলায় সাত আসামির মধ্যে মমতাজ উদ্দিন, নজরুল ইসলাম মজনু, আমির হামজা, জাকির হোসেন, জালাল গাজি, হাসমত আলীকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। এর মধ্যে জালাল গাজি পলাতক রয়েছেন এবং অপর আসামি নাইনুল ইসলামকে খালাস দিয়েছেন আদালত।
মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট আব্রাহাম লিংকন এবং আসামি পক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট আজিজুর রহমান দুলুসহ পাঁচ আইনজীবী।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১৪ সালের ১৪ জানুয়ারি কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারী উপজেলার দিয়াডাঙ্গা গ্রামে সুলতান মিয়ার বাড়িতে একদল মুখোশধারী গভীর রাতে প্রবেশ করে সুলতান ও তার নাতনী রোমানা, আনিকা এবং স্ত্রী হাজেরাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। ঘটনায় পরদিন নিহত সুলতানের ছেলে হাফিজুর রহমান ভুরুঙ্গামারী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। আসামি মমতাজ উদ্দিনের সঙ্গে ছোট ভাই নিহত সুলতানের বিরোধ ছিল। সুলতানকে হত্যার জন্য মমতাজ দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের পাঁচ লাখ টাকা ও একবিঘা জমি দেওয়ার চুক্তিতে ভাড়া করেন।
রায় ঘোষণার পর নিহত সুলতানের স্বজন রফিক আহমেদ বলেন, এ রায়ে আমরা সন্তুষ্ট। আমরা চাই দ্রুত এ রায় কার্যকর করা হোক।
কুড়িগ্রাম পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট আব্রাহাম লিংকন গণমাধ্যমকে বলেন, চার্জশিট দাখিলের দ্রুততম সময়ে এ রায় ঘোষণা করা হলো। এ রায়ে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। রায় ঘোষণার পর দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের কাঠগড়া ভাঙচুরের ঘটনার মতো ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচারণই প্রমাণ করে তারা কতটা দুর্ধষ।