সারাদেশে জাতীয়করণ করা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪৮ হাজার শিক্ষকের টাইম স্কেল ফেরত সংক্রান্ত রিটের শুনানি শেষ হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি খায়রুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ রায়ের জন্য এ দিন ধার্য করেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মোকছেদুল ইসলাম। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়।
এর আগে, ১৩ জানুয়ারি সারাদেশে জাতীয়করণ করা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪৮ হাজার শিক্ষকের টাইম স্কেলের রিট মামলা তিন সপ্তাহের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে হাইকোর্ট বিভাগকে নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ। বিচারপতি জে বি এম হাসানের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মামলা নিষ্পত্তি করতে বলা হয়।
পরে ব্যারিস্টার মোকছেদুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের আবেদনের শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগ তিন সপ্তাহের মধ্যে শিক্ষকের টাইম স্কেল সংক্রান্ত রুল নিষ্পত্তি করতে নির্দেশ দিয়েছেন।
সেই নির্দেশ মতে শুনানি শেষে আজ রায়ের দিন ধার্য করা হলো।
গত বছরের ১২ আগস্ট বেসরকারি থেকে সরকারি হওয়া প্রাথমিক শিক্ষকদের ‘টাইম স্কেল’-এর সুবিধা ফেরত দেওয়ার বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয় একটি পরিপত্র জারি করে। এর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে সংক্ষুব্ধ শিক্ষকরা রিট করেন। তখন হাইকোর্ট বিভাগ পরিপত্র স্থগিত করে রুল জারি করেন। এর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে আবেদন করেন। ১৩ সেপ্টেম্বর চেম্বার আদালত হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করেন। পরে স্থগিতাদেশ তুলে দিতে শিক্ষকরা আপিল বিভাগে আবেদন করে। আপিল বিভাগ তিন সপ্তাহের মধ্যে হাইকোর্ট বিভাগে রিট মামলাটি নিষ্পত্তি করতে বলেছেন।
গত বছরের ১২ আগস্ট অর্থ মন্ত্রণালয় একটি আদেশ জারি করে। ওই আদেশের মাধ্যমে ৪৮ হাজার ৭২০ জন শিক্ষকের ক্ষেত্রে টাইম স্কেল বাতিল করে অতিরিক্ত অর্থ ফেরত নেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়।
পরে অর্থ মন্ত্রণালয়ের জারি করা আদেশটির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে গত ৩১ আগস্ট হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়। বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক কল্যাণ সমিতির পক্ষে এ রিট দায়ের করেন।
গত বছরের ৩১ আগস্ট ওই রিটের শুনানি নিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আদেশটি ৬ মাসের জন্য স্থগিত করেন হাইকোর্ট। বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও বিচারপতি মো. মাহমুদ হাসান তালুকদারের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
এরপর হাইকোর্টের আদেশের অনুলিপি গত বছরের ৮ সেপ্টেম্বর অর্থ মন্ত্রণালয় সহ মামলার সংশ্লিষ্ট বিবাদীদের পাঠানো হয়। কিন্তু এরপরও গত ২৪ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ উপেক্ষা করে পুনরায় অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে ৪৮ হাজার ৭২০ জন শিক্ষকের ক্ষেত্রে টাইম স্কেল বাতিল করে অতিরিক্ত অর্থ ফেরত নেওয়ার জন্য হিসাব মহানিয়ন্ত্রককে নির্দেশ দেওয়া হয়। এর ধারাবাহিকতায় রিট মামলাটি আপিল বিভাগে গেলে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ রিট মামলাটি নিষ্পত্তি করতে নির্দেশ দেন।