মোঃ জাহিদ হোসেন:
” হে বিশ্বাসীগন! তোমরা যখন একে অন্যের সহিত নির্ধারিত সময়ের ঋনের কারবার কর তখন উহা লিখিয়া রাখিও। সাক্ষীদের মধ্যে যাহাদের উপর তোমারা রাজি তাহাদের মধ্যে দুইজন পুরুষ সাক্ষী রাখিবে যদি পুরুষ না থাকে তবে একজন পুরুষ ও দুজন মহিলা, মহিলাদের মধ্যে একজন ভুল করিলে তাহাদের অপরজন স্মরণ করাইয়া দিবে। ” কোরআনের এই আয়াতের উপর ভিত্তি করে মুসলিম বিবাহের চুক্তিতেও দুইজন পুরুষ অথবা একজন পুরুষ ও দুজন মহিলা সাক্ষী হিসেবে স্থির করা হয়েছে। [১]
বিবাহের রেজিষ্ট্রেশন কোরআন বা হাদিস দ্বারা প্রমানিত না তবে হাদিসের মধ্যে এ ধরনের কোন নিষেধাজ্ঞা নেই ; তবে হানাফি ফকীহদের মতে নিকাহের কিতাব অর্থাৎ বিবাহ সংঘটন সম্পর্কে লিখে রাখা মুস্তাহাব। ( ফতহুল কাদির, কেতাবুন নিকাহ) [২]
১৯৬১ সালের মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশে বিবাহ রেজিষ্ট্রেশন করবার বিধান করা হয়েছিল কিন্তু তা তখন বাধ্যতামূলক করা হয়নি। ১৯৭৪ সালের ৫২ নং আইন, মুসলিম বিবাহ ও তালাক রেজিষ্ট্রেকরন আইন দ্বারা মুসলিম বিবাহকে রেজিষ্ট্রেকরন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
এটা অমান্য করলে সাজার বিধানের কথা বলে হয়েছে।
মুসলিম বিবাহ ও তালাক রেজিষ্ট্রিকরন আইনের ৫ ধারায়। সাজা হতে পারে ২ বছর পর্যন্ত যেকোন মেয়াদের বিনাশ্রম কারাদন্ড অথবা তিন হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদন্ড বা উভয়দন্ডে দন্ডিত হবেন৷ [৩]
মুসলমানের বিবাহ মূলত একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান। পাত্র ও পাত্রী ইজাব কবুলের মাধ্যমে বিবাহ সম্পূর্ণ হয়। শরিয়তের যেই সমস্ত বিধান উল্লেখ আছে তা প্রতিপালিত হলেই বিবাহ শুদ্ধ হয়ে যায়। বিবাহ রেজিস্ট্রি না করলে বিবাহ অসিদ্ধ হয় না। [৪]
যাই হোক না কেন, আমাদের দেশে সমাজিক প্রেক্ষাপটে বিবাহ করে বিবাহের অস্বীকারের ঘটনা অহরহ ঘটে। এমতাবস্থায় বিবাহ রেজিষ্ট্রেশন এর বিকল্প নেই। তাছাড়া আমাদের প্রচলিত আইন অনুযায়ী মুসলিম বিবাহ রেজিষ্ট্রেশন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। বাংলাদেশের সকল মুসলমানের উপর এই আইন প্রযোজ্য।
Reference ;
১, ২, ৪ – মুসলিম আইনের ভাষ্য ; গাজী শামছুর রহমান। পৃষ্ঠা – ৩৫, ৩৭।
৩ – মুসলিম বিবাহ ও তালাক ( রেজিস্ট্রিকরন) আইন ১৯৭৪।
লেখক : শিক্ষানবিশ আইনজীবী, জেলা ও দায়রা জজ আদালত, ঢাকা।