স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে (২৬ মার্চ) বায়তুল মোকাররমে সহিংসতার ঘটনায় হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে করা মামলার এজহার গ্রহণ করেছেন আদালত। মঙ্গলবার (৬ এপ্রিল) ঢাকা মহানগর হাকিম ধীমান চন্দ্র মন্ডল মামলার এজহার গ্রহণ করেন। একইসঙ্গে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ২৭ মে দিন ধার্য করেন।
এর আগে সোমবার (৫ এপ্রিল) ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের উপ-দফতর সম্পাদক খন্দকার আরিফুজ্জামান বাদী হয়ে পল্টন থানায় মামলা দায়ের করেন।
মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক ও মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিবের ষড়যন্ত্র ও নির্দেশনায় অজ্ঞাতনামা দুই থেকে তিন হাজার হেফাজত, জামায়াত, শিবির ও বিএনপির কর্মী সারাদেশে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর ও লুটতরাজ চালায়।
গত ২৬ মার্চ জুমার নামাজ শেষে মসজিদের বাইরে উত্তর গেটের সিঁড়িতে জামায়াত-শিবির-বিএনপি ও হেফাজতের কয়েক হাজার লোকের উশৃঙ্খলভাবে জমায়েত শুরু হয়। আসামিরা দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে গোপন বৈঠকে মিলিত হয়ে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীর কর্মসূচি বানচাল করতে ঢাকাসহ সারাদেশে ব্যাপক তাণ্ডব চালিয়ে নৈরাজ্য সৃষ্টির পরিকল্পনা ও ষড়যন্ত্র করে।
এ সময় তারা জমায়েত থেকে রাষ্ট্র ও সরকারবিরোধী নানা স্লোগান দিতে থাকে। হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হকের প্রত্যক্ষ নির্দেশে পূর্বপরিকল্পিতভাবে ঘৃণ্য ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নের দেশি-বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্রসহ দা, ছোরা, কুড়াল, কিরিজ, হাতুড়ি, তলোয়ার, বাঁশ, গজারি, সাবল, পাইপ ও রিভলবারসহ অন্যান্য আগ্নেয়াস্ত্র সজ্জিত হয়ে অতর্কিতভাবে সাধারণ মুসল্লিদের ওপর হামলা করে।
মামলায় আরও উল্লেখ করা হয়, আসামিরা বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের টাইলস ভেঙে ফেলে, বিভিন্ন হাদিস, কোরআন শরিফসহ ধর্মীয় পুস্তকে অগ্নিসংযোগ করে ইসলামের অপূরণীয় ক্ষতিসাধন করে। এছাড়া মামুনুল হকসহ অন্য আসামিদের পূর্বপরিকল্পনায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ভাঙচুর করে এবং কিশোরগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ অফিস ও বঙ্গবন্ধুর ছবি ভাঙচুর করে।
মামলার অপর আসামিরা হলেন- হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিব, মাওলানা লোকমান হাবিব, নাসির উদ্দিন মনির, নায়েবে আমির মাওলানা বাহাউদ্দিন জাকারিয়া, মাখজান মাওলানা নুরুল ইসলাম জেহাদী।
এছাড়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া নায়েবে আমির মাজেদুর রহমান, মাওলানা হাবিবুর রহমান, মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ আইয়্যুবী, সহকারী মহাসচিব মাওলানা জসিম উদ্দিন, টঙ্গীর সহ-সাংগঠনিক মাওলানা মাসুদুল করিম, অর্থ সম্পাদক মুফতি মনির হোসাইন কাশেমী, প্রচার সম্পাদক মাওলানা যাকারিয়া নোমান ফয়েজী, মাওলানা ফয়সাল আহমেদ, সহকারী দাওয়া সম্পাদক মাওলানা মুশতাকুন্নবী, ছাত্র ও যুব সম্পাদক মাওলানা হাফেজ মো. জোবায়ের ও দফতর সম্পাদক মাওলানা হাফেজ মো. তৈয়বকে আসামি করা হয়েছে।