বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাস মোকাবিলায় স্বল্প, মাঝারি এবং দীর্ঘমেয়াদী জাতীয় পরিকল্পনা প্রণয়নের জন্য সরকারের সংশ্লিষ্টদের প্রতি লিগ্যাল (আইনি) নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
একই সাথে নোটিশে করোনা চিকিৎসায় প্রয়োজনীয় পথ্য, ওষুধ, অক্সিজেন এবং ১৮ বছর বয়সী সকল নাগরিকের জন্য পর্যাপ্ত টিকা কিনে তা দেয়ার ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বলা হয়েছে।
শনিবার (২৪ এপ্রিল) মানবাধিকার সংস্থা ল’ অ্যান্ড লাইফ ফাউন্ডেশনের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব ও ব্যারিস্টার মোহাম্মদ কাওছার লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছেন।
ইমেইলে পাঠানো নোটিশে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, কেবিনেট সচিব, পরিকল্পনা সচিব, রোগতত্ত্ব, নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালকে বিবাদী করা হয়েছে। নোটিশ পাওয়ার পর তিন দিনের মধ্যে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা না হলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
নোটিশ পাঠানার বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন আইনজীবী ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব নিজে।
নোটিশে বলা হয়েছে, দেশ করোনার দ্বিতীয় ঢেউ অতিক্রম করছে। দ্বিতীয় ঢেউয়ে এ ভাইরাস আরও বেশি আগ্রাসী। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে এবং শত শত মানুষ মারা যাচ্ছে। হাসপাতালগুলো ইতিমধ্যে রোগীতে টইটম্বুর। ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীরা রোগী সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন। করোনা প্রতিনিয়তই তার রূপ পাল্টে নতুন নতুন রূপে আবির্ভূত হচ্ছে।
নোটিশে আরও বলা হয়েছে, বিভিন্ন গবেষণার রিপোর্ট থেকে প্রতীয়মান হয় যে, করোনাভাইরাস শিগগিরই নির্মূল হচ্ছে না বরং এটি আগামী ১০ থেকে ১৫ বছর স্থায়ী হতে পারে। দীর্ঘমেয়াদে করোনাভাইরাস মোকাবিলায় প্রয়োজন জাতীয় পর্যায়ে সমন্বিত পরিকল্পনা। করোনাভাইরাসের নতুন নতুন বিধ্বংসী প্রকরণ মোকাবিলা করতে গিয়ে প্রতিবেশী দেশ ভারতের স্বাস্থ্যব্যবস্থা ইতিমধ্যে ভেঙে পড়েছে।
‘প্রয়োজনীয় অক্সিজেনের অভাবে অসংখ্য রোগী প্রতিদিন মারা যাচ্ছে। টিকার অপ্রতুলতা, প্রয়োজনীয় ওষুধ ও হাসপাতালের স্বল্পতা বিষয়টিকে আরও মারাত্মক করে তুলেছে। সে দেশের উচ্চ আদালত ভিক্ষা করে হলেও অক্সিজেন আমদানির জন্য সরকারকে নির্দেশ দিয়েছেন।’
বাংলাদেশে এ ধরনের পরিস্থিতি এড়ানোর জন্য সরকারকে এখনই স্বল্প, মাঝারি ও দীর্ঘ মেয়াদি সমন্বিত জাতীয় পরিকল্পনা প্রণয়ন করে তা বাস্তবায়নে উদ্যোগ গ্রহণ করার জন্য নোটিশে বলা হয়।
নোটিশে করোনা চিকিৎসায় প্রয়োজনীয় পথ্য, ওষুধ, অক্সিজেন এবং ১৮ বছর বয়সী সকল নাগরিকের জন্য পর্যাপ্ত টিকা ক্রয় করে তা প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বলা হয়।
নোটিশে বলা হয়েছে, বিশেষ করে টিকা পাওয়ার ক্ষত্রে সরকার ৪০ বছরের বয়স সীমা নির্ধারণ করায় এর নিচের বয়সী যারা বিভিন্ন স্বাস্থ্য জটিলতায় ভুগছেন, তারা দুর্গতিতে পড়েছেন। কারণ স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, যারা বিভিন্ন স্বাস্থ্য জটিলতায় আছেন তারা বেশি ঝুঁকিপূর্ণ এবং তাদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা দেয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে। কাজেই যারা ৪০ বছরের নিচে অথচ বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যায় রয়েছেন তাদেরও বয়স বিবেচনা না করে টিকা দেয়ার ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বলা হয়েছে।