ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হেফাজতের হরতালের সময় শহরজুড়ে ব্যাপক ভাঙচুর ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আরও ৭ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (২৩ এপ্রিল) রাতে জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশের দাবি, গ্রেফতারকৃতরা সবাই হেফাজতের কর্মী-সমর্থক।
এ নিয়ে তাণ্ডবের ঘটনায় সর্বমোট ৩৫৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
শনিবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে জেলা পুলিশের বিশেষ শাখা থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, হেফাজতের তাণ্ডবের ঘটনায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিভিন্ন থানায় এ পর্যন্ত ৫৬টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এরমধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় ৪৯টি, আশুগঞ্জ থানায় ৪টি, সরাইল থানায় ২টি এবং আখাউড়া রেলওয়ে থানায় ১টি মামলা দায়ের করা হয়।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, ‘পুলিশ ভিডিও ফুটেজ ও ছবি দেখে আসামিদেরকে গ্রেফতার করছে। এ ছাড়া যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আছে তাদেরকে গ্রেফতার করা হচ্ছে।
তিনি জানান, ‘তাণ্ডবের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৩৫৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত সকলকেই আইনের আওতায় আনা হবে। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।
প্রসঙ্গত, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশে আগমনের প্রতিবাদে হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীরা গত ২৬ থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্যাপক ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ চালায়। এসময় হামলাকারীরা জেলার রেলওয়ে স্টেশন, পৌরসভা কার্যালয়, সুর সম্রাট আলাউদ্দিন সঙ্গীতাঙ্গণ, এসিল্যান্ডের কার্যালয়, সুর সম্রাট আলাউদ্দিন খাঁ পৌর মিলনায়তন, জেলা ক্রীড়া সংস্থার কার্যালয়, পুলিশ সুপারের কার্যালয়, সিভিল সার্জনের কার্যালয়, জেলা মৎস্য অফিস, সার্কিট হাউজ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাব, মাতৃ সদন, সরকারি গণগ্রন্থাগার, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল-মামুন সরকারের বাসভবন, জেলা শিল্পকলা একাডেমি, বঙ্গবন্ধু স্কয়ারে স্থাপিত বঙ্গবন্ধুর দুটি ম্যুরালসহ তিনটি ম্যুরাল, শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত ভাষা চত্বরে উন্নয়ন মেলার প্যান্ডেল, একই চত্বরে থাকা শহর সমাজসেবা প্রকল্পের অফিস, মুক্তিযোদ্ধা সংহতি পরিষদের অফিস, পৌর মেয়রের বাসভবন, সার্কিট হাউজ, হাইওয়ে থানা ভবন, ইউনিভার্সিটি অব ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ক্যাম্পাস, হিন্দু সম্প্রদায়ের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান দক্ষিণ কালীবাড়ি, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতির বাসভবন, জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের বাসভবন, আশুগঞ্জ টোলপ্লাজা, সুহিলপুর ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়সহ সরকারি, বেসরকারি প্রায় অর্ধশতাধিক স্থাপনায় হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে পুরো ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে মৃত্যুপুরীতে পরিণত করে।