কুড়িগ্রামের রৌমারি উপজেলার ব্রহ্মপুত্র নদে অবৈধ ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলনের অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। গত ২৩ এপ্রিল দৈনিক মানবকন্ঠ ও গত ৩০ এপ্রিল দৈনিক সমকাল এর অনলাইন সংস্করণে এ সংক্রান্ত সচিত্র সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পর বিষয়টি আদালতের নজরে আছে এবং আদালত দ্রুত তদন্ত করে বিস্তারিত প্রতিবেদন জমা দেয়ার জন্য স্ব-প্রণোদিত হয়ে আদেশ জারি করেছেন কুড়িগ্রামের জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, রৌমারী আদালত।
২ মে (রবিবার) বিকালে এ আদেশ জারি করেন কুড়িগ্রামের জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. সুমন আলী।
আদালতে বিচারক মো. সুমন আলী আগামী ৩০ মে (রবিবার) মধ্যে বিষয়টি বিস্তারিত তদন্ত করে প্রতিবেদন আদালতে জমা দেয়ার জন্য রৌমারি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দিয়েছেন। এছাড়াও তদন্তে দৈনিক মানবকন্ঠ ও দৈনিক সমকাল এর রৌমারি ও কুড়িগ্রাম এর প্রতিনিধি এবং প্রকাশিত সংবাদে উল্লিখিত ব্যক্তিবর্গকে সাক্ষী রাখতে বলা হয়।
আদালতের দেওয়া আদেশে বলা হয়, প্রতিবেদনে বর্ণিত অবৈধভাবে বালু উত্তোলন কার্যক্রম ফৌজদারি অপরাধ মর্মে আপাতদৃষ্টিতে আদালতের নিকট প্রতিয়মান হয় এবং উক্তরূপ কার্য বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন, ২০১০ এর ০৪ ধারার সুস্পষ্ট লঙ্ঘণ, যা উক্ত আইনের ১৫ ধারার অধীন শাস্তিযোগ্য। উপর্যুক্ত অবস্থাধীনে আদালত প্রকাশিত সংবাদের প্রেক্ষিতে বর্ণিত অপরাধ ফৌজদারি কার্যবিধি, ১৮৯৮ এর ১৯০ (১) (সি) ধারায় আমলে গ্রহণ করেছেন। এই সময়ে আদালত নির্দেশ দেন, আদালতের বিচারক তদন্তে রৌমারি উপজেলায় সর্বমোট কতটি পয়েন্ট হতে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে তার সংখ্যা নির্ণয়, বৈধভাবে বালু উত্তোলনের পয়েন্ট সংখ্যা নির্ণয়, অবৈধভাবে ড্রেজারের মাধ্যমে বালু উত্তোলনকারী ও সহায়তাকারীদের সনাক্তকরণ করার জন্য।
প্রসঙ্গত, উপজেলার ব্রহ্মপুত্র নদের বামতীরের ফুলুয়ারচর নৌকা ঘাট এলাকা, ধনারচর চরের গ্রাম, ধনারচর নতুনগ্রাম, কর্তিমারি নৌকা ঘাট এলাকা, কোমরভাঙ্গি পাখিউড়া, বলদমারা ঘাট, ঘুঘুমারি এলাকা, জিন্জিমারি নদীর ইজলামারি ব্রীজ, খেওয়ারচর রাবার ড্যাম ব্রীজ, লালকুড়া খেয়াঘাট, বাওয়াইর গ্রাম, সোনাভরী নদীর কান্দাপাড়া, চাক্তাবাড়ি এলাকাসহ শতাধিক পয়েন্টে অবৈধ ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করছে বালুদস্যুরা। ফলে প্রতি বছর শত শত বসতবাড়ি নদ-নদীর গর্ভে বিলীন হলেও দেখার মতো কেউ থাকছে না।