ব্যক্তির বিদেশযাত্রা ঠেকাতে লাগবে আদালতের অনুমতি- হাইকোর্টের দেয়া এমন রায় স্থগিত করেনি আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালত। তবে, হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে দুদকের করা আপিল শুনানির জন্য প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে আগামী ১৩ জুন ওই আপিলের ওপর শুনানি হতে পারে।
১১ মে (মঙ্গলবার) আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের চেম্বার জজ এই আদেশ দেন। আবেদনের পক্ষে আইনজীবী খুরশীদ আলম খান শুনানি করেন।
‘আতাউর রহমান বনাম বাংলাদেশ সরকার ও অন্যান্য’ মামলায় হাইকোর্টের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল বেঞ্চ ওই ব্যক্তির বিদেশযাত্রা ঠেকাতে আদালতের অনুমতির কথা বলেছিলেন।
হাইকোর্টের রায়ে বলা হয়, দুর্নীতি বা অন্যান্য মামলার অনুসন্ধান বা তদন্ত পর্যায়ে সংশ্লিষ্ট কোনো ব্যক্তিকে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা বা চলাফেরা নিয়ন্ত্রণ করতে দেশে কোনো আইন ও বিধি নেই। তবে, সময়ের প্রয়োজনে এ ধরনের আইন ও বিধি প্রণয়ন অপরিহার্য হয়ে পড়েছে।
কিন্তু আইন ও বিধির অনুপস্থিতিতে সরকার কিংবা রাষ্ট্রের অন্য কোনো কর্তৃপক্ষ বা সংস্থা শুধু ‘খেয়ালের’ বশবর্তী হয়ে দেশের কোনো নাগরিকের চলাফেরার স্বাধীনতার ওপর হস্তক্ষেপ করতে বা নিষেধাজ্ঞা দিতে পারে না। একজন নাগরিকের চলাফেরার স্বাধীনতা ব্যক্তি জীবনের স্বাধীনতার অন্তর্ভুক্ত, যা শাশ্বত। এ স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করতে হলে আইন নির্ধারিত নিয়মে বা পদ্ধতিতে করতে হবে।
রায়ে হাইকোর্ট বলেছেন, সামগ্রিক অবস্থা বিবেচনায় আমাদের সুস্পষ্ট ও সুনির্দিষ্ট অভিমত এই যে, দুর্নীতি দমন কমিশনসহ (দুদক) বিভিন্ন তদন্ত সংস্থা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উচিত হবে অনুসন্ধান বা তদন্ত পর্যায়ে যে কোনো অপরাধের সঙ্গে জড়িত সন্দেহভাজন কোনো ব্যক্তির দেশত্যাগ ঠেকাতে অবিলম্বে প্রয়োজনীয় আইন ও বিধি প্রণয়ন করা।
যতক্ষণ পর্যন্ত এ ধরনের আইন ও বিধি প্রণীত না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত অন্তর্বর্তী ব্যবস্থা হিসেবে এখতিয়ার সম্পন্ন আদালতের কাছে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞার আবেদন করে অনুমতি গ্রহণ করা।
হাইকোর্টের এ রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করে দুর্নীতি দমন কমিশন দুদক। ওই আবেদন শুনানি শেষে চেম্বা রজজ আদালতের বিচারপতি হাইকোর্টের রায় স্থগিত না করে আবেদনটি শুনানির জন্যে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন।