স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের করা মামলায় প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলামের জামিন আবেদনের ওপর শুনানি শেষ হয়েছে। নথিপত্র পর্যালোচনার জন্য রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আদালত। দ্রুততম সময়ের মধ্যে আদেশ দেওয়া হবে। আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বাকী বিল্লাহর আদালতে ভার্চ্যুয়ালি এ শুনানি হয়।
আদালতে রোজিনা ইসলামের জামিন শুনানিতে অংশ নেন তাঁর আইনজীবীরা। আদালতের সামনে গণমাধ্যমকর্মীরা ভিড় করেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরাও সেখানে ছিলেন। আদালতের বাইরে অপেক্ষায় আছেন রোজিনা ইসলামের স্বামী মনিরুল ইসলাম ও স্বজনেরা।
সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট ও দণ্ডবিধিতে করা এই মামলার তদন্তের দায়িত্ব গতকাল বুধবার ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগকে (ডিবি) দেওয়া হয়েছে। ডিবির রমনা বিভাগের উপকমিশনার এইচ এম আজিমুল হক গণমাধ্যমকে বলেন, মামলাটির তদন্তভার তাঁরা পেয়েছেন। এখন তাঁরা শাহবাগ থানা থেকে নথিপত্র বুঝে নেবেন।
এর আগে পুলিশ রোজিনা ইসলামকে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে গত মঙ্গলবার আদালতে হাজির করে। একই সঙ্গে রোজিনাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড চেয়ে আবেদন করে পুলিশ। অন্যদিকে রোজিনা ইসলামের জামিনের আবেদন জানান তাঁর আইনজীবীরা। ওই দিন শুনানি নিয়ে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জসিম রিমান্ড আবেদন নাকচ করেন এবং রোজিনার জামিন আবেদনের ওপর অধিকতর শুনানির জন্য ২০ মে দিন ধার্য করেন। সেদিন আদালতের নির্দেশে রোজিনাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
রোজিনা ইসলামের আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী গতকাল গণমাধ্যমকে বলেন, রোজিনা ইসলাম ন্যায়বিচার পাবেন বলে ইতিমধ্যে আইনমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন। জামিন চেয়ে তাঁর করা আবেদনের ওপর আজ বৃহস্পতিবার ভার্চ্যুয়ালি শুনানির দিন ধার্য রয়েছে। তিনি বলেন, রোজিনা ইসলাম একজন নারী, তিনি অসুস্থ, সর্বোপরি তাঁর বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে, তা ত্রুটিপূর্ণ। জামিন অযোগ্য অপরাধের উপাদান এজাহারে প্রকাশিত না হওয়ায় রোজিনা ইসলাম জামিন পাওয়ার যোগ্য।
উল্লেখ্য, রোজিনা ইসলাম গত সোমবার দুপুরের পর পেশাগত দায়িত্ব পালনে সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে যান। মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা তাঁকে একটি কক্ষে আটকে রাখেন। প্রায় ছয় ঘণ্টা পর রাত সাড়ে আটটার দিকে রোজিনাকে শাহবাগ থানা-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। তাঁকে রাত ৯টার দিকে শাহবাগ থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
পরে রাত পৌনে ১২টার দিকে তাঁর বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় মামলা করা হয়। মামলার বাদী হন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের উপসচিব শিব্বির আহমেদ ওসমানী।