মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত এক আসামির আপিল শুনানির সময় বিচারপতি জানতে পারলেন, আসামির বাড়ি নিজের পাশের গ্রামে। এ কারণে আপিল শুনানির জন্য গঠিত বেঞ্চ থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নিয়েছেন আপিল বিভাগের বিচারপতি।
মঙ্গলবার কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলার ছিলনী গ্রামের বাসিন্দা মকবুল হোসেন ওরফে মকবুল হাসানের আপিল শুনানির সময় এ ঘটনা ঘটে।
প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির আপিল বেঞ্চে শুনানিটি চলছিল। এ সময় আসামি মকবুলের গ্রামের নাম শুনে বিচারপতি মো. নুরুজ্জামান বলেন, ‘এর বাড়ি আমার পাশের গ্রামে। এ মামলার শুনানিতে আমি থাকতে চাই না।’
এ কথা শুনে প্রধান বিচারপতি তাৎক্ষণিক অনুমতি দেন। বিচারপতি নুরুজ্জামান মামলার শুনানির বেঞ্চ থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেন।
মামলার শুনানিতে আসামিপক্ষে আইনজীবী ছিলেন ফজলুর রহমান ও উম্মে কুলসুম বেগম রেখা। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ।
নিজের অজান্তে কোনো সহানুভূতি চলে না আসে সেই চিন্তা থেকে বিচারপতি মো. নুরুজ্জামান নিজেকে শুনানি থেকে প্রত্যাহার করে নেন বলে জানিয়েছেন আসামিপক্ষে আইনজীবী ছিলেন ফজলুর রহমান।
তিনি বলেন, সকালে শুনানি শুরু হলে মামলায় আসামির ঠিকানা দেখে বিচারপতি মো. নুরুজ্জামান নিজেকে শুনানি থেকে প্রত্যাহার করে নেন। মামলার রায়ের ক্ষেত্রে যেন কোনো ধরনের প্রভাব না পড়ে কিংবা নিজের অজান্তে কোনো সহানুভূতি চলে না আসে, সেই বিবেচনা থেকেই তিনি মামলার শুনানি থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেন।
ন্যায় বিচারের স্বার্থেই বিচারপতি মো. নুরুজ্জামান এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০০৩ সালের ২৮ ডিসেম্বর ওলিউল্লাহ নামে এক ব্যক্তি খুন হয়। সেই মামলায় আসামি কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলার ছিলনী গ্রামের মকবুল হোসেন। ২০০৬ সালে মকবুল হোসেনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে রায় দেন ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল। এরপর ডেথ রেফারেন্স হিসেবে মামলাটি হাইকোর্টে আসে। আসামিও আপিল করেন। হাইকোর্ট ২০১২ সালে আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন।
পরে এ রায়ের বিরুদ্ধেও আপিল দায়ের করেন মকবুল হোসেন। ওই আপিলটি শুনানির জন্য মঙ্গলবার আপিল বিভাগের কার্যতালিকার এক নম্বরে ছিল।
(তথ্য সহায়তা- যুগান্তর)