আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. ইমান আলী বলেছেন, মামলা বা বিরোধ নিষ্পত্তিতে আগামী দিনের বিচারব্যবস্থায় সবচেয়ে জনপ্রিয় পদ্ধতিতে পরিণত হবে মেডিয়েশন। কারণ মেডিয়েশনের মাধ্যমে দ্রুত ও কম খরচে মামলা নিষ্পত্তি সম্ভব। অন্যদিকে আরবিট্রেশনের (প্রচলিত বিচার) মাধ্যমে মামলা নিষ্পত্তি করতে বছরের পর বছর কেটে যায়, প্রচুর অর্থ ব্যয় করতে হয়, তবুও মামলা নিষ্পত্তি হয় না। তাই বিচারপ্রার্থীদের মেডিয়েশন পদ্ধতি সম্পর্কে সচেতন করতে হবে। বিরোধ বা মামলা নিষ্পত্তিতে মেডিয়েশন সেরা সমাধান।
শুক্রবার (১ অক্টোবর) বিকেলে মেডিয়েশন বিষয়ে ঢাকা বিভাগের বিচারকদের দুইদিন ব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালার সূচনা বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল মেডিয়েশন সোসাইটির (বিমস) এ প্রশিক্ষণ কর্মশালায় ৪০ জন বিচারক নিয়েছেন।
বিচারপতি মো. ইমান আলী বলেন, কিছুদিন আগে একটি ভার্চুয়াল সেমিনারে ভারত ও সিঙ্গাপুরের প্রধান বিচারপতি বলেছেন, মেডিয়েশনের বিকল্প কোনো ব্যবস্থা নেই। বিচারব্যবস্থায় মেডিয়েশনের প্রয়োগ বাধ্যতামূলক করতে হবে। বিরোধ বা মামলা নিষ্পত্তিতে মেডিয়েশন বেস্ট সলিউশন। অচিরেই পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ বিরোধ মীমাংসায় বা মামলা নিষ্পত্তিতে মেডিয়েশনকে একমাত্র মাধ্যম হিসেবে গ্রহণ করবে। কারণ এই পদ্ধতিতে কোনো পক্ষ হারে না। উভয়পক্ষের মধ্যে উইন উইন সিচুয়েশন বিরাজ করে।
তিনি বলেন, বর্তমানে দেশের আদালতগুলোতে ৪০ লাখ মামলা বিচারাধীন রয়েছে। মেডিয়েশন পদ্ধতির প্রয়োগই এই মামলাজট নিরসন করতে পারে। মেডিয়েশন পদ্ধতি প্রয়োগ বাধ্যতামূলক করে সুপ্রিম কোর্ট থেকে এরই মধ্যে সার্কুলার জারি করা হয়েছে। তাই বিচারকদের মেডিয়েশন পদ্ধতি প্রয়োগের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। আগে সবাই বলতো, বিরোধ নিষ্পত্তিতে মেডিয়েশন পদ্ধতির প্রয়োগ ভলেয়ান্টরি। কিন্তু এখন থেকে তা ম্যান্ডেটরি।
প্রশিক্ষণ কর্মশালায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য দেন- ভারতের জম্মু-কাশ্মীরের সাবেক প্রধান বিচারপতি জাস্টিস গীতা মিতাল, ভারতের সুপ্রিম কোর্টের সাবেক বিচারপতি কুরিয়ান জোসেফ, বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল মেডিয়েশন সোসাইটির চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট এস এন গোস্বামী, আন্তর্জাতিক প্রশিক্ষক অ্যাক্রিডিটেড মেডিয়েটর প্রিয়াংকা চক্রবর্তী প্রমুখ।