কোনও পৌরসভায় একসঙ্গে ১২ মাসের বেতন-ভাতা বকেয়া রাখলে পৌরসভা বাতিল করে দেওয়ার বিধান রেখে ‘স্থানীয় সরকার (পৌরসভা)(সংশোধন) আইন, ২০২১’ খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। একইসঙ্গে নির্ধারিত সময়ে নির্বাচিত মেয়রের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করতে ব্যর্থ হলে পৌরসভায় প্রশাসক নিয়োগ দেওয়ার বিধান রাখা হচ্ছে সংশোধিত আইনে। এ আইনের বলে কোনও পৌরসভার মেয়র কোনও অজুহাতেই পাঁচ বছরের বেশি সময় দায়িত্বে থাকতে পারবেন না।
সোমবার (৪ অক্টোবর) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভা বৈঠকে এই অনুমোদন দেওয়া হয়। গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী ও সচিবালয়ের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীরা বৈঠকে যোগ দেন।
বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম প্রেস ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনুমোদিত বিষয়গুলো সাংবাদিকদের অবহিত করেন।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘যুক্তিসঙ্গত কারণ ছাড়া কোনও পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতাদি ১২ মাস বকেয়া থাকলেই পৌরসভা বাতিল করা যাবে। বর্তমানে ৮০ শতাংশ পৌরসভা বেতন-ভাতা দিতে পারছে।’ সমস্যাটা এখন অনেক কমে আসছে বলেও জানান খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব জানান, ২০০৯ সালের পৌরসভা আইনে একটা অপূর্ণতা ছিল। এই জিনিসটা কেউ খেয়াল করেনি। নির্বাচিত পৌরসভার সময়সীমা ছিল পাঁচ বছর। কিন্তু সেখানে একটা বিধান ছিল যে পাঁচ বছর হলেও পরবর্তী পৌরসভার নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত ওই মেয়র কন্টিনিউ করবে। এতে দেখা গেছে অনেক পৌরসভায় পাঁচ বছরের পরে বিভিন্ন ইস্যুতে মেয়ররা মামলা-মোকাদ্দমা করে ১২ থেকে ১৬ বছর পর্যন্ত মেয়র থেকে যাচ্ছেন। যেহেতু আইনে কোনও কিছু ক্লিয়ার ছিল না, সেজন্য কিছু করা যাচ্ছিল না। দোহারে মনে হয় ১৫ বছর ধরে মেয়র আছেন। কিছুই করা যাচ্ছিল না। হাইকোর্ট থেকেও তাদের পক্ষে রায় ছিল।’
এখন সংশোধিত আইন অনুযায়ী, পৌরসভায় প্রশাসক নিয়োগ দেওয়ার ছয় মাসের মধ্যে নির্বাচন দিতে হবে। পৌরসভায় সচিব পদে দায়িত্ব পালনকারী কর্মকর্তা ‘পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা’ হিসেবে পরিচিত হবেন।
খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘সেক্ষেত্রে (বাতিলের পর) প্রশাসনিক অভিজ্ঞতা সম্পন্ন কোনও কর্মকর্তা বা সরকার যদি কোনও ব্যক্তিকে যোগ্য মনে করেন, ছয় মাসের জন্য প্রশাসক নিয়োগ দিতে পারবেন। ছয় মাসের মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে। এই বিধানটা পৌরসভা আইনে ছিল না।’
তিনি বলেন, ‘আগে পৌরসভা করার জন্য প্রতি কিলোমিটারে দেড় হাজার লোক থাকার একটা শর্ত ছিল, সেটা দুই হাজার করে দেওয়া হয়েছে। এতে ট্যাক্স কালেকশনটা বাড়বে, কাজকর্ম বেশি হবে।’