ফেনীতে কালিদাস পাহালিয়া নদীর পরিবেশ দূষণের অভিযোগে স্বপ্রণোদিত হয়ে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন স্পেশাল ম্যাজিস্ট্রেট মো: জাকির হোসাইন।
ফেনী জেলা আইনজীবী সমিতির তিন জন সদস্য এ্যাডভোকেট বোরহান উদ্দিন চৌধুরী, এ্যাডভোকেট কাজী মো: শাহ জালাল ও এ্যাডভোকেট মো: আবুল বাশার একটি পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ পরিবেশ আদালতের নজরে আনলে পরিবেশ আদালতের স্পেশাল ম্যাজিস্ট্রেট স্বপ্রণোদিত হয়ে ৫ অক্টোবর মঙ্গলবার এই আদেশ দেন।
আদালতসূত্রে জানা যায়, ফেনীর স্থানীয় সাপ্তাহিক ফেনী বার্তা এর গত ৪ অক্টোবর, ২০২১খ্রি. তারিখ প্রকাশিত “বহুমূখী দূষণের কবলে কালিদাস পাহালিয়া নদী” শিরোনামে এম. এমরান পাটোয়ারী কর্তৃক প্রস্তুতকৃত সংবাদে লেখা হয়, ফেনী জেলার ফেনী সদর উপজেলা ও সোনাগাজী উপজেলাধীন কালিদাস পাহাালিয়া নদী পোল্ট্রি খামারের বর্জ্য, মরা মুরগী, পঁচা ডিম ও বিভিন্ন আবর্জনা ফেলাসহ বহুমূখী দূষণে এবং দখলের ফলে ব্যাপকভাবে দূষিত হচ্ছে। এতে একদিকে দূষিত হচ্ছে নদীর পানি অন্যদিকে পরিবেশের উপরও পড়ছে বিরূপ প্রভাব। দূষণের হাত থেকে এই নদীকে বাঁচাতে এখনই ব্যবস্থা না নিলে অস্তিত্ব সংকটে পড়বে এই নদী। বিশেষ করে পোল্ট্রি খামারীদের কারণে বেশিরভাগই দূষণের স্বীকার এই নদীটি। কালিদাস পাহালিয়া নদীর অববাহিকার মধ্যে ফেনী সদর উপজেলার লেমুয়া, ফরহাদনগর ও ধলিয়া ইউনিয়নের কিছু এলাকা এবং সোনাগাজী উপজেলার নবাবপুর ইউনিয়নের প্রায় পুরো এলাকাজুড়ে নদীর দুই পাড়ে গড়ে উঠেছে শত শত খামার। এইসব খামারের বর্জ্য ও মরা মুরগীকে বস্তায় ভরে ফেলা হয় নদীতে। পরে ঐসব বর্জ্য ও মুরগী পঁচে সৃষ্টি হয় দূর্গন্ধ। যার ফলে চরম দুর্ভোগে পড়তে হয় ঐ সব এলাকার বাসিন্দাদের। এছাড়া খামারের বর্জ্যগুলো ও মরা মুরগী বস্তায় ভরে কোথাও কোথাও বস্তায় না ভরে খোলামেলা ছেড়ে দেয়া হয় নদীতে। দূষিত করা হয় স্বচ্ছ জলরাশিকে। নদীর পানিতে চরম দূর্গন্ধ। বাতাসের সাথে নাকে ভেসে আসছে মুরগীর বিষ্ঠার পঁচা দূর্গন্ধ। পরিবেশ আদালতের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, কালিদাস পাহালিয়া নদী ফেনী সদর উপজেলা ও সোনাগাজী উপজেলাধীন একটি গুরুত্বপূর্ণ নদী । উক্ত নদী বিভিন্ন ব্যক্তি কর্তৃক দূষণের ফলে নদীটি পরিবেশের জন্য হুমকির পথে।
নদী দূষণ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫ অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ। জনজীবনের স্বাভাবিক পরিবেশ নিশ্চিত ও পরিবেশ সংক্রাস্ত অপরাধ নির্মুল করার লক্ষ্যে এই সংবাদকে আমলে নিয়ে বিস্তারিত তদন্ত প্রয়োজন। এজন্য সরেজমিনে তদন্ত ও প্রকৃত আসামীদের চিহিৃতকরণ এবং কালিদাস পাহালিয়া নদীর দূষণের বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনানুগ পদক্ষেপ নেয়ার জন্য ফেনীর পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
আগামী ২৪শে অক্টোবর তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের কথা রয়েছে। এছাড়াও এই ঘটনা তদন্তের স্বার্থে ফেনী সদর উপজেলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সোনাগাজী উপজেলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং ফেনী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ ও সোনাগাজী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ কে আইনগত ও প্রশাসনিক সহায়তা প্রদানের নির্দেশ প্রদান করা হয়।