ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪-এর বিচারক শেখ নাজমুল আলমের আদালতে গত ২৯ আগস্ট আসামিরা আত্মপক্ষ সমর্থনে নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন। মামলায় চার্জশিটভুক্ত ২১ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেছেন আদালত।
২০২০ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশ মামলাটি ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪-এ বদলির আদেশ দেন। এরপর গত বছরের ১৩ আগস্ট সিনহাসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন বিচারক।
২০১৯ সালের ১০ জুলাই দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকায় মামলাটি দায়ের করা হয়। দুদক পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেন এর বাদী। ওই বছরের ১০ ডিসেম্বর আদালতে চার্জশিট জমা দেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দুদকের পরিচালক বেনজীর আহমেদ। এর আগে ৪ ডিসেম্বর কমিশনের সভায় ১১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) অনুমোদন দেওয়া হয়।
মামলার আসামিদের মধ্যে ফারমার্স ব্যাংক লিমিটেডের অডিট কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান মো. মাহবুবুল হক চিশতী (বাবুল চিশতী) কারাগারে আছেন। এছাড়া ফারমার্স ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে এম শামীম, ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট স্বপন কুমার রায়, ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. লুৎফুল হক, সাবেক এসইভিপি গাজী সালাহউদ্দিন, টাঙ্গাইলের বাসিন্দা মো. শাহজাহান ও একই এলাকার বাসিন্দা নিরঞ্জন চন্দ্র সাহা জামিনে আছেন।
সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বর্তমানে বিদেশে অবস্থান করছেন। তার পাশাপাশি ফারমার্স ব্যাংকের ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট সাফিউদ্দিন আসকারী, রণজিৎ চন্দ্র সাহা ও তার স্ত্রী সান্ত্রী রায় পলাতক। মামলার এক আসামি মৃত হিসেবে প্রমাণ পাওয়ায় চার্জশিট থেকে তার নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া তদন্ত শেষে নতুন আসামি করা হয়েছে ফারমার্স ব্যাংকের নিরীক্ষা কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক চিশতীকে (বাবুল চিশতী)।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ফারমার্স ব্যাংকের গুলশান শাখা থেকে চার কোটি টাকা ঋণ পেয়েছিলেন কথিত ব্যবসায়ী শাহজাহান ও নিরঞ্জন। সেই অর্থ রনজিৎ চন্দ্র সাহার হাত ঘুরে বিচারপতি এস কে সিনহার বাড়ি বিক্রির টাকা হিসেবে দেখিয়ে তার ব্যাংক হিসাবে ঢুকেছে। অভিযোগটি পাওয়ার পর তদন্তে নামে দুদক।
দুদকের মামলায় সাবেক ফারমার্স ব্যাংক (বর্তমানে পদ্মা ব্যাংক) থেকে ভুয়া তথ্য দিয়ে অন্যের নামে চার কোটি টাকার ঋণ করে পরে এস কে সিনহার ব্যাংক হিসাবে স্থানান্তর করার অভিযোগ আনা হয়।এতে বলা হয়, সেই ব্যাংক হিসাব থেকে পরবর্তী সময়ে টাকা স্থানান্তর ও রূপান্তরের মাধ্যমে পাচার করা হয়েছে।
দুদক বলছে, মামলার তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। তাই সংশ্লিষ্ট তদন্ত কর্মকর্তার সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে এস কে সিনহাসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র অনুমোদন দেওয়া হয়।
সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় এবং কিছু পর্যবেক্ষণ লেখেন এসকে সিনহা। এরপর ব্যাপক সমালোচনার মুখে ২০১৭ সালের অক্টোবরের শুরুতে ছুটিতে যান সাবেক প্রধান বিচারপতি। পরে বিদেশ থেকেই তিনি পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দেন।
