ফেনী থেকে শ্রীকান্ত দেবনাথ: ফেনীর আদালতের নাজমুস সাকিব নামে এক আইনজীবীকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার অভিযোগে কোর্ট পরিদর্শক মো. গোলাম জিলানীকে প্রত্যাহার করতে ৭২ ঘণ্টা সময় দিয়েছে জেলা আইনজীবী সমিতি। সেই সাথে এই সময়ের মধ্যে তাকে বিভাগীয় শাস্তির আওতায় আনার সুপারিশের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
জেলা আইনজীবী সমিতির জরুরি সভায় রোববার (৯ জানুয়ারি) বিকালে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট নুর হোসেন। তিনি জানান, সোমবার (আজ, ১০ জানুয়ারি) দুপুরে সভার সিদ্ধান্তসমূহ রেজুলেশন আকারে চিফ জুডিশিয়ালের বিচারক ও জেলা জজের মাধ্যমে জেলা পুলিশ সুপার ও পুলিশের উচ্চ মহলের নজরে দেওয়া হবে।
এর আগে, গত ২ জানুয়ারি ফেনীর আদালতের নাজমুস সাকিব নামে এক আইনজীবীকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন কোর্ট পরিদর্শক জিলানী। ভুক্তভোগী আইনজীবী বিষয়টি প্রথমে মৌখিক ও পরে ৪ জানুয়ারি লিখিত আবেদন জানিয়ে বিচার দাবি করেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জরুরি সভা ডাকে জেলা আইনজীবী সমিতি।
গত রোববার (২ জানুয়ারি) মনির আহমেদ নামে এক ব্যক্তির জামিন দেন আদালত। জামিননামাটি যথাসময় না পৌঁছানোর কারণ জানতে চান ওই ব্যক্তির আইনজীবী নাজমুস সাকিব। জবাবে কোর্ট পরিদর্শক জিলানী কোন সদুত্তর দিতে পারেননি। উপরন্তু অ্যাডভোকেট নাজমুস সাকিবের মোবাইল ফোনটা কেড়ে নিয়ে অফিস থেকে ধাক্কা দিয়ে বের করে দেয়।
এরপর বিষয়টি চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে অবহিত করেন আইনজীবী সাকিব। এছাড়া আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কাছে লিখতি অভিযোগ করেন। এ প্রেক্ষিতে গতকাল রোববার (৯ জানুয়ারি) জরুরি সভা ডাকে জেলা আইনজীবী সমিতি।
সবাইকে অবাক করে জরুরী সভা শুরু হওয়ার পূর্বে আইনজীবী নাজমুস সাকিব তানিম তার দরখাস্ত প্রত্যাহার করে নেন।
কিন্তু আইনজীবীকে লাঞ্ছিত করার ঘটনা সমগ্র আইনজীবী সমাজের মানহানী করায় জেলা আইনজীবী সমিতি নাজমুস সাকিবের অভিযোগ প্রত্যাহার করার পরও সাধারণ সভা চালিয়ে যায়।
সভার সকল বক্তা বিনা কারণে আইনজীবী লাঞ্ছিতের ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। তাই তারা এই বিষয়ে কঠোর অবস্থান ব্যক্ত করেন। তারা বলেন, বিনা কারণে যদি কোন আইনজীবী লাঞ্ছিত হয় সেখানে আপামর জনসাধারণ কোনো ভাবেই নিরাপদ নন।
বক্তরা আরো বলেন, পুলিশ- আইনজীবী সহাবস্থানের মাধ্যমে সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় উল্লেখ যোগ্য ভূমিকা রাখছে। কিন্তু কোন ব্যক্তি ন্যাক্কারজনক আচরণের মাধ্যমে সম্প্রীতি নষ্ট করে আইন পেশার মান ক্ষুন্ন করার চেষ্টা করলে তার বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান ব্যক্ত করেন জেলা আইনজীবী সমিতি।