সিটি করপোরেশন এলাকায় সংরক্ষিত আসনে নির্বাচিত নারী কাউন্সিলর কর্তৃক ওয়ারিশান সনদ প্রদান সংক্রান্ত আইনি বিধান নিয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন দায়ের করা হয়েছে। এতে নারী কাউন্সিলরের পক্ষ থেকে জন্ম ও মৃত্যুসনদসহ অন্যান্য সনদ দেওয়া যাবে না মর্মে যে আইন করা হয়েছে তা চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সংরক্ষিত আসনের তিন কাউন্সিলরের পক্ষে আজ মঙ্গলবার (১১ জানুয়ারি) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ রিট আবেদনটি দায়ের করেন।
তিন আবেদনকারী হলেন—খালেদা আলম, সাহেদা বেগম ও নাসরিন রশিদ পুতুল।
আবেদনে আইন সচিব, এলজিআরডি সচিব, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র এবং সচিবকে বিবাদী করা হয়েছে।
এর আগে, গত ২৮ নভেম্বর ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সচিব একটি দাপ্তরিক আদেশ জারি করেন। সেখানে বলা হয়, মৃত ব্যক্তির উত্তরাধিকার, জাতীয়তা ও চারিত্রিক সনদপত্র দেওয়ার দায়িত্ব সিটি করপোরেশন (কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলরদের দায়িত্ব, কার্যাবলি ও সুযোগ সুবিধা) বিধিমালা-২০১২ অনুচ্ছেদ নম্বর ৩(৩) অনুসারে সাধারণ কাউন্সিলরদের ওপর অর্পিত। এ জাতীয় সনদপত্র সংরক্ষিত আসনের কউন্সিলরদের দেওয়ার আইনগত/বিধিগত সুযোগ নেই।
বিধিমালায় কাউন্সিলরদের দায়িত্ব ও কার্যাবলির ৩ ধারার ৩ উপধারায় বলা হয়েছে, মৃত ব্যক্তির উত্তরাধিকার, জাতীয়তা ও চারিত্রিক সনদপত্র প্রদান।
আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ বলেন, সংবিধান অনুসারে সবার সমান অধিকার। কিন্তু সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলরদের সনদ প্রদান না করতে আদেশ জারি করে করপোরেশন। তাই বিধিমালার ৩(৩) এবং সিটি করপোরেশনের দাপ্তরিক আদেশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট করা হয়েছে।
আবেদনে বিধিমালার ৩(৩) কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না এবং ২৮ নভেম্বর সিটি করপোরেশনের দাপ্তরিক আদেশ কেন সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হবে না, তা জনতে চেয়ে রুল জারির আর্জি জানানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০০২ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর স্থানীয় সরকার বিভাগের এক পরিপত্রে সাধারণ ও সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলরদের কে কী কাজ করবেন, তা উল্লেখ করা হয়েছে।
ওই পরিপত্রের পাঁচ নম্বরে বলা হয়েছে, সাধারণ আসনের কমিশনার ওয়ার্ড এলাকার জন্ম-মৃত্যু, মৃত ব্যক্তির পোষ্য-সংক্রান্ত উত্তরাধিকার, জাতীয়তা ও চারিত্রিক সনদ প্রদান করবেন। এখানে সংরক্ষিত আসনের কথা উল্লেখ নেই।
একইভাবে ২০১২ সালে কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলরদের দায়িত্ব, কার্যাবলি ও সুযোগ-সুবিধাসংক্রান্ত যে বিধিমালা জারি করেছে, তাতেও এ সনদ দেওয়ার ক্ষমতা শুধু সাধারণ আসনের কাউন্সিলরকে দেওয়া হয়েছে।