সাড়ে চার বছর আগে রাজধানীর দক্ষিণখানে দুই শিশুকে ধর্ষণ মামলায় এক কলেজ শিক্ষার্থীকে ছয় বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। একইসঙ্গে আসামিকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ২ মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়। ঘটনার সময় আসামির বয়স ১৪ বছর ছিল বলে শিশু বিবেচনায় এই দণ্ড দিয়েছেন আদালত।
আজ বৃহস্পতিবার (১৩ জানুয়ারি) ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৫ এর বিচারক বেগম শামসুন্নাহার এ রায় দেন।
দণ্ডিত আসামির নাম সিফাত ভূঁইয়া (১৮)। রায় ঘোষণা শেষে আসামিকে সাজা পরোয়ানা দিয়ে কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানো হয়। ধর্ষণের শিকার ওই দুই শিশু সিফাতের ফুফাতো বোন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী শ ম মো. আব্দুল আওয়াল বকুল গণমাধ্যমকে রায় ঘোষণার তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
রায়ে বিচারক বলেন, ‘আসামির বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। যদিও এ ধারায় আসামির সর্বোচ্চ সাজা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। কিন্তু আসামি একজন শিশু। শিশু আইনে এমন দণ্ডে বাধা আছে। সেসব বিষয় বিবেচনা করে আসামিকে ধর্ষণের অভিযোগে শিশু আইনে ৬ বছর বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে তাকে আরও ২ মাস বিনাশ্রম কারাগারে থাকতে হবে।’
আদালত আরও বলেন, ‘আসামি শিশু হওয়ায় এখন কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে যাবে। কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্র পরবর্তীতে ব্যবস্থা নেবে।’
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের ২৭ জুন দুই শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে সিফাতের বিরুদ্ধে মামলা হয়। দক্ষিণখান থানায় সিফাতের ফুফু বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা গেছে, ২০১৭ সালের ১৯ জুন শ্বশুর অসুস্থায় হওয়ায় দুই শিশুকে বাসায় রেখে তিনি হাসপাতালে যান। মাগরিবের নামাজের পর তারা বাসায় ফিরে আসেন। এর কয়েকদিন পর ২৫ জুন তার মেয়ে বিষয়টি জানান। বিস্তারিত জেনে তিনি থানায় মামলা করেন।
মামলাটি তদন্ত করে ওই বছরের ২০ সেপ্টেম্বর সিফাত ভূঁইয়াকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করেন দক্ষিণখান থানার উপপরিদর্শক সুজন হক। এরপর আদালত সিফাতের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন।
বিচার চলাকালে মামলায় আদালত ১০ সাক্ষীর মধ্যে সাতজনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন। এছাড়া সিফাতের পক্ষে সাফাই সাক্ষী দেন তারা বাবা, চাচাসহ চারজন।