বহুল আলোচিত বরগুনার রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি নিহতের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নির খালাস চেয়ে করা জেল আপিল হাইকোর্টের কার্যতালিকায় রয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার (২০ জানুয়ারি) মিন্নির এ জেল আপিলের অ্যাডমিশনের (গ্রহণযোগ্যতার) ওপর শুনানির হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চে শুনানি হতে পারে বলে আইনজীবী সূত্রে জানা গেছে।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এ এম জামিউল হক ফয়সাল গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, জেল আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করলে নিয়মিত আপিল ও জেল আপিল এবং মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের বিষয়ে ডেথ রেফারেন্সের শুনানি একইসঙ্গে হবে। আবেদন শুনানিতে থাকবেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. জহিরুল ইসলাম (জেড আই) খান পান্না।
এর আগে একই মামলায় খালাস চেয়ে নিয়মিত আপিল দায়ের করেছিলেন মিন্নি। পরে ২০২০ সালের ৪ নভেম্বর সে আবেদনটি শুনানির জন্য গ্রহণ করেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তার জরিমানাও স্থগিত করেন উচ্চ আদালত।
নিয়ম অনুযায়ী, ফৌজদারি মামলায় বিচারিক আদালত যখন আসামিদের মৃত্যুদণ্ড দেন, তখন ওই দণ্ড কার্যকরের জন্য হাইকোর্টের অনুমোদনের প্রয়োজন হয়। এজন্য সংশ্লিষ্ট বিচারিক আদালত ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৭৪ ধারা মোতাবেক মামলার সব নথি হাইকোর্টে পাঠিয়ে দেন, যা ডেথ রেফারেন্স নামে পরিচিত। ওই নথি আসার পর হাইকোর্টের ডেথ রেফারেন্স শাখা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সংশ্লিষ্ট মামলার পেপারবুক প্রস্তুত করেন। পেপারবুক প্রস্তুত হলে মামলাটি শুনানির জন্য প্রস্তুত হয়েছে বলে ধরে নেওয়া হয়।
তবে কোনো কোনো মামলার ক্ষেত্রে প্রধান বিচারপতির নির্দেশে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পেপারবুক তৈরি করা হয়। এ মামলার পেপারবুক তৈরি হওয়ার পর প্রধান বিচারপতি মামলার শুনানির জন্য যখন বেঞ্চ নির্ধারণ করবেন তখন আপিল শুনানি শুরু হবে।
বিচারিক আদালতের রায়
২০২০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলার প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির রায় ঘোষণা করেন বরগুনার জেলা ও দায়রা জজ বিচারক মো. আছাদুজ্জামানের আদালত। রায়ে নিহত রিফাতের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নিসহ ছয়জন অভিযুক্তকে ফাঁসির আদেশ দেন আদালত।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- মো. রাকিবুল হাসান রিফাত ওরফে রিফাত ফরাজী, আল কাইয়ুম ওরফে রাব্বী আকন, মোহাইমিনুল ইসলাম সিফাত, রেজোয়ান আলী খাঁন হৃদয় ওরফে টিকটক হৃদয়, মো. হাসান ও আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি। বর্তমানে মিন্নিকে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখা হয়েছে।
এছাড়া মামলার অন্য চার আসামিকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়। খালাসপ্রাপ্ত চারজন হলেন— মো. মুসা (পলাতক), রাফিউল ইসলাম রাব্বি, মো. সাগর এবং কামরুল ইসলাম সাইমুন।