পঞ্চগড়ে ৩৬ বছরের এক বিধবা নারীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ ও ভুয়া বিয়ে করে প্রতারণার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় কুড়িগ্রাম থানার এক পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে আদালত।
আজ রোববার (২৩ জানুয়ারি) দুপুরে পঞ্চগড় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মেহেদী হাসান তালুকদার এ আদেশ দিয়েছেন।
আদালতে বাদী পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন আইনজীবী মেহেদী হাসান মিলন।
অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তার নাম আব্দুল জলিল (৪৫)। তিনি বর্তমানে কুড়িগ্রাম সদর থানায় উপ-পরিদর্শক (এসআই) হিসেবে কর্মরত আছেন। এসআই আব্দুল জলিল গাইবান্ধা জেলার উত্তর ফুলিয়া সদর এলাকার আব্দুল শুকুর আলীর ছেলে।
মামলার প্রেক্ষাপট
এজাহার সূত্রে জানা গেছে, বিধবা ওই নারীর মৃত স্বামীর ভাইয়ের সঙ্গে বাড়ির সীমানা নিয়ে বিরোধ চলছিল। এ ঘটনায় ওই নারী গত ২০২০ সালের ৩০ এপ্রিল পঞ্চগড় সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।
এ প্রেক্ষিতে এসআই আব্দুল জলিল পঞ্চগড় সদর থানায় কর্মরত থাকায় সাধারণ ডায়েরির তদন্ত শুরু করেন। এ সময় ওই বিধবা নারীকে এসআই বিভিন্ন রকম প্রলোভন দেখানো শুরু করে। ওই বছরের গত ৬ অক্টোবর মঙ্গলবার রাতে পঞ্চগড় সদর উপজেলার পূর্বজালাশী এলাকার বাদীনির মৃত স্বামীর বসতবাড়ির ঘরে প্রবেশ করে ধর্ষণ করেন জলিল। তখন ওই বিধবা নারীর সন্তানেরা শব্দ পেয়ে তাদের আপত্তিকর অবস্থায় আটক করেন। পরে এসআই তাকে বিয়ে করতে চেয়ে মোবাইল ফোনে দুইজনকে ডেকে নিয়ে আসেন। ওই দুইজন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে নিজেদের কাজী ও মৌলভী পরিচয় দিয়ে একটি নীল কাগজে দুইজনের স্বাক্ষর করে নেন। একই সঙ্গে কবুল পড়ান। এরপর পঞ্চগড়ে কর্মরত থাকা অবস্থায় ওই নারীর সঙ্গে দীর্ঘদিন শারীরিক মেলামেশা করেন।
ওই বিধবা নারী এসআই জলিলের কাছে বিবাহের কাবিননামা দেখতে চাইলে তিনি টালবাহানা করতে শুরু করেন। এরপর জলিল উপর মহলকে ম্যানেজ করে পঞ্চগড় থেকে কুড়িগ্রামে চলে যান। তাকে না পেয়ে যোগাযোগ করা হলে তিনি ৭ অক্টোবর পঞ্চগড় কোর্টে সাক্ষী দিতে এসে ওই নারীকে নিয়ে যাওয়ার আশ্বাস দেন। পরে পঞ্চগড় এসে আবারো স্বামী পরিচয়ে শারীরিক মেলামেশা শুরু করেন। এক পর্যায়ে কোর্টে সাক্ষী শেষে এসআই জলিল গোপনে কুড়িগ্রাম থেকে পালিয়ে যান। এরপর জলিল মোবাইলে মিথ্যা বিয়ের কথা বলে ধর্ষণ করার কথা শিকার করে বিভিন্ন রকম হুমকি দিতে থাকেন ওই নারীকে।
এরপর ওই নারীর সঙ্গে এসআই জলিল কোনো যোগাযোগ না করায় গত ২০২১ সালের ২৫ মার্চ নারী ও শিশু দমন ট্রাইব্যুনালে ২০০০ সালের (সংশোধনী/০৩) আইনের ৯(১) ধারায় ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় আদালত আসামিকে গ্রেফতার করার নির্দেশ দেন।