পাকিস্তানের সর্বোচ্চ আদালতের প্রথম নারী বিচারক হিসেবে শপথ নিয়েছেন বিচারপতি আয়েশা মালিক। তাঁর এই শপথ গ্রহণের মধ্য দিয়ে দেশটির বিচার বিভাগে নতুন ইতিহাস সৃষ্টি হল। ১৯৪৭ সালে স্বাধীনতার পর আয়েশা মালিকই প্রথম নারী বিচারক হিসেবে পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্টে নিয়োগ পেলেন।
আজ সোমবার (২৪ জানুয়ারি) পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদের সুপ্রিম কোর্ট ভবনে শপথ গ্রহণ করেন তিনি। শপথ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন দেশটির সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি গুলজার আহমেদ।
অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতি গুলজার আহমেদ বলেন, আয়েশা মালিক কারো দয়ায় সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতির দায়িত্ব পাননি। নিজের মেধাগত যোগ্যতাতেই বিচারপতি আয়েশা এই পদে নিযুক্ত হয়েছেন।
এদিকে পাকিস্তানের ইতিহাসে সর্বোচ্চ আদালতে প্রথম নারী বিচারক হিসেবে নিয়োগ পাওয়ায় আয়েশা মালিককে অভিনন্দন জানিয়েছে দেশটির প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। এক টুইট বার্তায় পাক প্রধানমন্ত্রী বলেন, সুপ্রিম কোর্টের প্রথম নারী বিচারক হওয়ায় আয়েশা মালিককে অভিনন্দন। তাঁর জন্য শুভ কামনা।
গত ৬ জানুয়ারি পাকিস্তানে বিচারকদের নিয়োগ-পদোন্নতি দেখভালে নিয়োজিত সংস্থা জুডিশিয়াল কমিশন অব পাকিস্তানের (জেসিপি) বৈঠকে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি হিসেবে ৫৫ বছর বয়সী এ নারীকে মনোনীত করা হয়। প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের মনোনয়ন বোর্ডের বৈঠকে চার-এক ভোটে আয়েশা মালিককে মনোনীত করা হয়।
এর আগে গত বছরের ১৭ আগস্ট সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি মুশির আলমের অবসরের পর নতুন বিচারপতি নিয়োগে আয়েশা মালিকের নাম প্রস্তাব করেন লাহোর হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি।
যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভাড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলএম উত্তীর্ণ হওয়ার পর ১৯৯৭ সাল থেকে পাকিস্তানে আইনী পেশা শুরু করেন আয়েশা মালিক। ২০১২ সালে লাহোর হাইকোর্টে বিচারপতি নিযুক্ত হন তিনি।
গত বছর জুনে এক মামলায় যৌন নিপীড়নে ভুক্তভোগীর কুমারিত্ব পরীক্ষাকে ‘অবৈধ ও পাকিস্তানের সংবিধান বিরোধী’ হিসেবে ঐতিহাসিক রায় দেন আয়েশা মালিক।
অবশ্য ঐতিহাসিক এই নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েও মতভেদ রয়েছে পাকিস্তানে। অনেক আইনজীবী এবং বিচারকও এই নিয়োগের বিরোধিতা করেছেন। বেশ কিছু আইনজীবী এই নিয়োগের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ধর্মঘটে যাওয়ার এবং আদালতের কার্যক্রম বয়কটের হুমকিও দিয়েছেন।