চিকিৎসার নামে দুই কিশোরীকে ধর্ষণের পর ভিডিও ধারণ করে বিভিন্ন ব্যক্তির মোবাইল ও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার দায়ে এক ভণ্ড কবিরাজকে ১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
আজ বুধবার (২৬ জানুয়ারি) বেলা সোয়া ৩টার দিকে রাজশাহীর সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক জেলা ও দায়রা জজ মো. জিয়াউর রহমান এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডিত আসামির নাম আল-আমিন। তিনি নাটোর জেলার বড়াইগ্রাম উপজেলার চান্দাই গ্রামের বাসিন্দা। রায় ঘোষণার সময় অভিযুক্ত আসামি পলাতক ছিলেন।
রাজশাহী সাইবার ট্রাইব্যুনালের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ইসমত আরা গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, সশ্রম কারাদণ্ডের পাশাপাশি আদালত আসামিকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, প্রেমের সম্পর্ক জোড়া লাগানোর কথা বলে এলাকার ১৪ বছর বয়সী এক কিশোরীকে কবিরাজি চিকিৎসার নামে ঘরে নিয়ে ধর্ষণ করেন আল-আমিন। ২০১৫ সালের ২৩ অক্টোবর ওই ঘটনা ঘটে। এরপর থেকে ওই কিশোরীকে নিয়মিত ধর্ষণ করতেন তিনি। একই বছরের ১৫ নভেম্বর ১৩ বছরের আরেক কিশোরীকে কৌশলে কবিরাজি চিকিৎসার নামে ধর্ষণ করেন আল-আমিন।
এ সময় দু’জনের ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করে রাখেন তিনি। একই সঙ্গে আল-আমিন তাদের ভয় দেখাতে শুরু করেন। এরপর তিনি ধর্ষণের ভিডিও বিভিন্ন ব্যক্তির মোবাইল ও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেন।
ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর ভুক্তভোগী এক কিশোরীর বাবা বাদী হয়ে বড়াইগ্রাম থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন এবং তথ্য-প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় মামলা করেন। পুলিশ তদন্ত করে নাটোরের আদালতে বৃদ্ধ আল-আমিনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে।
এরপর নাটোরের আদালত থেকে তথ্য-প্রযুক্তি আইনের ধারার অংশটির বিচারের জন্য ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়। পরে রাজশাহীতে সাইবার ট্রাইব্যুনাল গঠন হলে এটি এখানে আসে। ৯ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে রায় ঘোষণা করলেন আদালত।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ইসমত আরা জানান, রাজশাহীর আদালতে শুধু ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার বিচার হলো। মামলা একটি হলেও ধারা আলাদা থাকার কারণে বিচার দুই আদালতে চলছে।
ধর্ষণের জন্য মামলার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ধারার অংশটির বিচার চলছে নাটোরের আদালতে। ওই অংশটুকুর রায় এখনও হয়নি বলেও জানান আইনজীবী ইসমত আরা।