নাটোরে পদ্মা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করায় স্বপ্রণোদিত হয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ আমলে নিয়ে গত বৃহস্পতিবার (১৪ এপ্রিল) নাটোরের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ আবু সাঈদ এই আদেশ দেন।
আগামী ৫ জুনের মধ্যে এ সংক্রান্ত তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য নাটোরের পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) বিশেষ পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
আদালত সূত্রে জানা যায়, আদালত তাঁর আদেশে উল্লেখ করেছেন ২৯ মার্চ মাছরাঙ্গা টিভির অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ থেকে প্রচারিত “নাটোরে লুট হচ্ছে পদ্মার লাখ লাখ টাকার বালু” ও ১০ এপ্রিল বণিক বার্তায় প্রকাশিত ”নাটোরে পদ্মা নদীতে অবাধে বালু উত্তোলন, নীরব প্রশাসন” শিরোনামে প্রচারিত প্রতিবেদন দুটি আদালতের নজরে এসেছে। আদালত প্রকাশিত সংবাদ দুটি ফৌজদারি কার্যবিধি, ১৮৯৮ এর ১৯০(১) (সি) ধারার ক্ষমতাবলে স্বপ্রণোদিত হয়ে আমলে গ্রহণ করেন।
প্রতিবেদন দুটি বিশ্লেষণ করে আদালতের কাছে স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয়েছে যে, কোনো ধরণের অনুমোদন ছাড়াই লালপুরের ঠিকাদার শরিফুল ইসলাম এবং জেলা পরিষদ সদস্য মতিউর রহমানের সহযোগিতায় পদ্মা নদী থেকে বালু উত্তোলন করছেন বনপাড়ার ঠিকাদার আব্দুল্লাহ।
আদালত আদেশে উল্লেখ করেছেন, এভাবে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বালু মহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন, ২০১০ এর ধারা ৪ ও ৫ এর স্পষ্ট লঙ্ঘন এবং একই আইনের ১৫ ধারা অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ। যার সর্বোচ্চ শাস্তি ২ বৎসর কারাদন্ড ও ১০ লক্ষ টাকা অর্থদন্ড। এছাড়াও চরের কৃষি জমি নষ্ট করে বালু পরিবহনের রাস্তা বানানোর ফলে দন্ডবিধির ৪২৭ ধারার অপরাধও সংঘটিত হয়েছে মর্মে অত্র ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট প্রতীয়মান হয়। যার শাস্তি ২ বছরের কারাদন্ড বা অর্থদন্ড।
আদালত তাঁর আদেশে অপরাধ কাদের দ্বারা বা কাদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহযোগিতায় সংঘটিত হচ্ছে, তা প্রাথমিক অনুসন্ধানের মাধ্যমে শনাক্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন পিবিআইকে। তদন্তকারী কর্মকর্তাকে তদন্তকালে আসামীদের সনাক্তকরণ, সাক্ষীদের জবানবন্দি গ্রহণ, ঘটনাস্থলের খসড়া মানচিত্র ও সূচীপত্র প্রস্তুত করবেন অবৈধ বালু উত্তোলনের কাজে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি পাওয়া গেলে তা জব্দ করার নির্দেশ দিয়েছেন। এছাড়াও লালপুরের ওপর দিয়ে বহমান অন্য যেকোনো নদী থেকে অভৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হলে তা বন্ধ করতে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ প্রদান করেছেন।