ভারতের উত্তরাখণ্ডে ছেলে-বউমার বিরুদ্ধে অভূতপূর্ব এক মামলা দায়ের করেছেন বাবা-মা। হয় সন্তানের জন্ম দাও, নইলে আমাদের পাঁচ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দাও। এমন দাবি করে ছেলে-বউমার বিরুদ্ধে এ মামলা করেছেন ওই দম্পতি। বিষয়টি নিয়ে গোটা দেশে শোরগোল পড়ে গেছে।
ভারতের কলকাতা থেকে প্রকাশিত বাংলা দৈনিক সংবাদ প্রতিদিন -এর বরাত দিয়ে এমনই এক খবর ছাপিয়েছে সময় টিভি।
উত্তরাখণ্ডের ওই দম্পতির দাবি, পড়াশোনার জন্য ছেলেকে আমেরিকায় পাঠিয়েছিলেন তারা। ফলে তাদের যাবতীয় সঞ্চয় শেষ হয়ে যায়। এখন চরম আর্থিক সংকটে ভুগছেন তারা।
বাবা সঞ্জীবরঞ্জন প্রসাদের বক্তব্য, ২০১৬ সালে ছেলের বিয়ে দিয়েছি। ছেলে হোক বা মেয়ে হোক আমাদের সমস্যা নেই। আমরা নাতি-নাতনির মুখ দেখতে চাইছি। অথবা ছেলে-বউমাকে দিতে হবে পাঁচ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ।
ছেলেকে উপযুক্ত শিক্ষা দিয়ে জীবনে প্রতিষ্ঠিত করার পরও এখন তাদের আর্থিক কষ্টের মধ্যদিয়ে যেতে হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন সঞ্জীবরঞ্জন। তিনি বলেন, আমার যাবতীয় সঞ্চয় ছেলের পেছনে খরচ করেছি। তাকে আমেরিকায় পড়িয়েছি। ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে বাড়ি করেছি। এখন আর্থিক সংকটে ভুগছি। হাতে একটা পয়সা নেই। সে জন্যই ছেলে-বউমা, দুজনের থেকে আড়াই কোটি করে চেয়েছি।
এ বিষয়ে মামলাকারীর আইনজীবীর বক্তব্য, এ মামলায় সমাজ বাস্তবতা প্রকাশ্যে এসেছে। ছেলের প্রতি যেমন দায়বদ্ধতা থাকে বাবা-মায়ের, তেমনই সময় হলে বাবা-মায়ের দেখভালের দায়িত্ব নেওয়া উচিত ছেলের।
আইনজীবী অরবিন্দ কুমার শ্রীবাস্তব বলেন, এ মামলা সমাজের সত্যিটা সামনে এনেছে। আমরা সন্তানদের জন্য সর্বস্ব দিয়ে দেই। যাতে তারা জীবনে প্রতিষ্ঠিত হয়, ভালো চাকরি পায়। সন্তানেরও উচিত বাবা-মাকে দেখভাল করা। এ ক্ষেত্রে বাবা-মা দাবি করেছেন, হয় এক বছরের মধ্যে ছেলে-বউমাকে সন্তানের জন্ম দিতে হবে, অথবা ৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
জানা গেছে, একসময়ে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ভেল-এর পদস্থ আধিকারিক ছিলেন সঞ্জীবরঞ্জন প্রসাদ। ছেলে শ্রেয় সাগর একটি বিমান সংস্থায় কাজ করেন। শ্রেয় বিয়ে করেছেন নয়ডার বাসিন্দা শুভাঙ্গী সিংহকে। বিয়ের পর প্রায় বছর ছয়েক অতিক্রান্ত হলেও সন্তানের জন্ম দিতে চান না শ্রেয়-শুভাঙ্গী। ফলে বৃদ্ধ দম্পতি চরম একাকিত্বে ভুগছেন। এ বৃদ্ধ বয়সেও তাদের মানসিক যন্ত্রণা ভোগ করতে হচ্ছে। পরিস্থিতির জেরেই আদালতে ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন তারা।