ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী হত্যা মামলায় ৩১ বছর পর কারাগার থেকে মুক্তি পাচ্ছেন এ মামলায় দোষী সাব্যস্ত এ জি পেরারিভালন।
আজ বুধবার (১৮ মে) এ মামলায় সুপ্রিম কোর্টে শুনানি ছিল। শুনানি শেষে তাঁকে মুক্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়। রাজীব হত্যাকারীর মুক্তির নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি সুপ্রিম কোর্ট এ-ও জানিয়ে দেয়, রাজ্য মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত মানতে বাধ্য সেই রাজ্যের রাজ্যপাল।
তামিলনাড়ু সরকার তাঁর মুক্তির জন্য আগেই আবেদন জানিয়েছিল। বিশেষ অধিকার প্রয়োগ করে সেই আবেদন মঞ্জুর করলেন দেশের শীর্ষ আদালত।
পেরারিভালন বর্তমানে জামিনে মুক্ত আছেন। তিনি স্থায়ী কারাগার মুক্তির আবেদনে লিখেছিলেন, ‘আমি ৩১ বছর ধরে জেলে বন্দি অবস্থায় রয়েছি। তাই আমায় এবার মুক্তি দেওয়া হোক।’
২০০৮ সালে তামিলনাড়ু মন্ত্রিসভা তাঁর মুক্তির সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছিল। রাজ্যপাল মন্ত্রিসভার সেই সিদ্ধান্তকে রাষ্ট্রপতির কাছে বিবেচনার জন্য পাঠিয়েছিলেন। তখন থেকেই পেরারিভালনের মুক্তি-মামলা থমকে আছে। সুপ্রিম কোর্ট ১০ মে এ মামলার শুনানি শেষ করে রায় স্থগিত রাখে।
রাজীব গান্ধী হত্যার সময় ১৯ বছর বয়স ছিল পেরারিভালনের। শ্রীলঙ্কার লিবারেশন টাইগারস অব তামিল ইলামের সদস্য রাজীব হত্যা মামলার অন্যতম অভিযুক্ত শ্রীবাসনের জন্য দুটি ৯ ভোল্টের ব্যাটারি কেনার অভিযোগ ছিল পেরারিভালনের বিরুদ্ধে। সেই ব্যাটারিই বিস্ফোরণ ঘটানোর জন্য ব্যবহৃত হয়েছিল।
পেরারিভালনকে গ্রেপ্তারের পর ১৯৯৮ সালে সন্ত্রাস দমন আদালত তাঁকে মৃত্যুদণ্ডের শাস্তি দেওয়া হয়েছিল। ১৯৯৯ সালে সেই সাজাই বহাল রাখেন শীর্ষ আদালত। তবে ২০১৪ সালে তা বদলে যাবজ্জীবন করা হয়। চলতি বছর মার্চে এ দোষীর জামিন মঞ্জুর করা হয়।
এরপরই নির্ধারিত সময়ের আগে মুক্তির আবেদন জানায় পেরারিভালন। যে আবেদনের বিরোধিতা করে কেন্দ্র। কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছিল, বিষয়টি রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের ওপর ছেড়ে দেন তামিলনাড়ুর রাজ্যপাল। কিন্তু এ ব্যাপারে অনেকটা সময় কেটে গেলেও কোনো সিদ্ধান্ত নেননি রাষ্ট্রপতি। এ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন শীর্ষ আদালত।
জানানো হয়, তামিলনাড়ু সরকার চায় রাজীব গান্ধী হত্যা মামলায় দোষী সাব্যস্ত সাতজনকেই ১৬১ ধারায় ক্ষমা করা হোক। তাই রাজ্যপাল রাজ্যের মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত মেনে নিতে বাধ্য। এ কারণে রাষ্ট্রপতির মতামতের জন্য অপেক্ষা করা অপ্রয়োজনীয়। এরপরই এদিন পেরারিভালনকে জেলমুক্তির নির্দেশ দিলেন সুপ্রিম কোর্ট।
শীর্ষ আদালতের এই রায়ই রাজীব হত্যা মাললার আরও ছয় অপরাধীর মুক্তির পথ প্রশস্ত হলো। যাঁদের মধ্যে রয়েছেন নলিনী শ্রীধরন এবং তাঁর স্বামী মুরুগানও।
সূত্র: প্রথম আলো