মেডিকেল রিপোর্ট আসার আগেই স্বাস্থ্যগত কারণ দেখিয়ে দুর্নীতির মামলায় ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটকে জামিন দেওয়ার ঘটনায় ঢাকা বিশেষ জজ আদালত-৬ এর বিচারককে সতর্ক করে দিয়েছেন হাইকোর্ট।
আজ বুধবার (১৮ মে) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের হাইকোর্ট বেঞ্চ অধস্তন আদালতের ওই বিচারককে সতর্ক করেন।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এদিন যুবলীগের বহিষ্কৃত নেতা ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন বাতিল করেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে তাকে ৭ দিনের মধ্যে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণেরও নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
আদালতে সম্রাটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরী। দুদকের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট খুরশিদ আলম খান।
আদেশের পর আদালতের পর্যবেক্ষণ উল্লেখ করে দুদকের আইনজীবী খুরশিদ আলম খান গণমাধ্যমকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, আদালত বলেছেন, মেডিকেল রিপোর্ট না দেখেই মেডিকেল গ্রাউন্ডে জামিন দিয়ে বিচারক যেন ঘোড়ার আগে গাড়ি জুড়ে দিয়েছেন। আদালত বিচারককে সতর্ক করে দিয়ে বলেন, ভবিষ্যতে তিনি যেন এ ধরনের কাজ না করেন।
খুরশিদ আলম খান বলেন, মামলার গুনাগুণ বিচার না করে শুধু মেডিক্যাল গ্রাউন্ডে ২০২০ ও ২০২১ সালের দুটি মেডিক্যাল রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করে সম্রাটকে জামিন দিয়েছেন বিচারিক আদালত। পাশাপাশি ৯ জুন মেডিক্যাল রিপোর্ট দাখিলেরও নির্দেশ দিয়েছেন। এপ্রেক্ষিতে মেডিকেল রিপোর্ট আসার আগেই স্বাস্থ্যগত কারণ দেখিয়ে জামিন দেওয়ায় সম্রাটের জামিন বাতিল করেছেন হাইকোর্ট।
গত ১১ মে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬-এর বিচারক আল আসাদ মো. আসিফুজ্জামান অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে করা দুদকের মামলায় সম্রাটকে জামিন দেন। অস্ত্র, মাদক ও অর্থপাচারের মামলার পর অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় জামিনের পর সম্রাটের বিরুদ্ধে আর কোনো মামলা না থাকায় মুক্তিতে বাধা নেই বলে জানিয়েছিলেন তার আইনজীবী।
এদিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসাধীন সম্রাটের উন্নত চিকিৎসা দরকার বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নজরুল ইসলাম খান। গত সোমবার তিনি বলেন, যুবলীগ নেতা সম্রাটের চিকিৎসার বিষয়ে বোর্ড মিটিং হয়েছে। সেখানে সিদ্ধান্ত হয়েছে তার উন্নত চিকিৎসা দরকার। তার চিকিৎসা দেশেও হতে পারে, বিদেশেও হতে পারে।
সম্রাটের বিরুদ্ধে মোট চারটি মামলা দায়ের করা হয়। মামলা চারটি হলো- অস্ত্র, মাদক, অর্থপাচার এবং দুদকের দায়ের করা মামলা। বর্তমানে সব মামলায় তিনি জামিনে রয়েছেন।
সবশেষ গত ১১ মে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে করা দুদকের করা মামলায় জামিন পান সম্রাট। ক্যাসিনোকাণ্ডে ২০১৯ সালের ৭ অক্টোবর সম্রাটকে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।