চার বছর আগে চাঁদপুর সদর ও হাইমচর উপজেলার ২১টি মৌজায় অবস্থিত মেঘনার ডুবোচর থেকে বালু উত্তোলনে সেলিম খানকে অনুমতি দিতে হাইকোর্ট যে রায় দিয়েছিলেন তা বাতিল করেছেন আপিল বিভাগ। ফলে ওই ২১ মৌজায় সেলিম খানের বালু উত্তোলন বন্ধই থাকছে বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী।
আজ রোববার (২৯ মে) প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আপিল বিভাগ এ আদেশ দেন। বেঞ্চের অপর দুই সদস্য হলেন, বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী মাঈনুল হাসান। সেলিম খানের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার আজমালুল হোসেন কিউসি।
পরে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী মাঈনুল হাসান বলেন, বালু উত্তোলনের পূর্বে বালুমহাল ঘোষণাসহ কিছু আইনগত প্রক্রিয়া রয়েছে। এক্ষেত্রে কোন আইনগত প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়নি।
তিনি বলেন, হাইকোর্টের রায়ের বরাতে সেলিম খান মেঘনা নদী থেকে দীর্ঘদিন যাবত বালু উত্তোলন করে আসছিলেন। তবে এক্ষেত্রে যে আইনের ব্যত্যয় ঘটেছে, তা সুনির্দিষ্টভাবে মাননীয় আদালতের কাছে উপস্থাপন করেছি।
রাষ্ট্রপক্ষের এই আইনজীবী বলেন, মাননীয় আদালত আমাদের বক্তব্যে সন্তুষ্ট হয়ে হাইকোর্টের রায় বাতিল করেছেন। ফলে মেঘনা নদী থেকে সেলিম খানের বালু তোলার আর কোনো সুযোগ নেই।
প্রসঙ্গত, মেঘনা নদীতে (চাঁদপুর সদর ও হাইমচরে অবস্থিত ২১টি মৌজা এলাকায়) জনস্বার্থে নিজ খরচে হাইড্রোগ্রাফিক জরিপ করতে নির্দেশনা চেয়ে ২০১৫ সালে রিট করেছিলেন চাঁদপুর সদর উপজেলার ১০ নম্বর লক্ষ্মীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সেলিম খান।
ওই রিটে ২০১৮ সালের ৫ এপ্রিল হাইকোর্ট রায় দেন। রায়ে ‘প্রকৃত অর্থে সহযোগিতায়’ চাঁদপুরের ২১টি মৌজায় অবস্থিত মেঘনার ডুবোচর থেকে ৮৬ দশমিক ৩০ কিউবিক মিটার (৩০ কোটি ৪৮ লাখ ঘনফুট) বালু উত্তোলনে তাঁকে অনুমতি দিতে চাঁদপুরের জেলা প্রশাসকসহ বিবাদীদের নির্দেশ দেওয়া হয়।
চলতি বছরের ১৫ মার্চ হাইকোর্টের দেওয়া ওই রায় স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করে।
এরপর গত ৪ এপ্রিল চাঁদপুরে মেঘনার ডুবোচর থেকে বালু উত্তোলনের অনুমতি দিয়ে হাইকোর্টের রায় স্থগিত করেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত। রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম এ আদেশ দেন।
সেই সাথে বিষয়টি শুনানির জন্য আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন চেম্বার আদালত। এর ধারাবাহিকতায় শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগ লিভ টু আপিল নিষ্পত্তি করে ওই সিদ্ধান্ত দেন।