রাজনৈতিক বিরোধীদের শত্রু হিসেবে গণ্য করার প্রবণতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ভারতের প্রধান বিচারপতি এন ভি রমনা। দেশটির রাজস্থান রাজ্যে আয়োজিত এক সেমিনারে অংশ নিয়ে গতকাল শনিবার (১৬ জুলাই) এন ভি রমনা এই উদ্বেগ প্রকাশ করেন। খবর এনডিটিভির।
রাজস্থান বিধানসভা ভবনে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে ভারতের সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ বিচারপতিরা উপস্থিত ছিলেন। উপস্থিতি ছিলেন কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী কিরেন রিজিজু। ‘সংসদীয় গণতন্ত্রের ৭৫ বছর’ শীর্ষক এই সেমিনারের আয়োজক কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারি অ্যাসোসিয়েশন।
ভারতের প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘রাজনৈতিক বিরোধিতাকে শত্রুতায় রূপান্তরিত করা উচিত নয়। কিন্তু দুঃখজনকভাবে আজকাল আমরা তা প্রত্যক্ষ করছি।’
এন ভি রমনা বলেন, এগুলো সুস্থ গণতন্ত্রের লক্ষণ নয়। ভারতে সরকার ও বিরোধীদের মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ ছিল। কিন্তু তা কমে যাচ্ছে। দুর্ভাগ্যবশত, ভারতে বিরোধীদের পরিসর কমে যাচ্ছে।
বর্তমান সময়ে ভারতের রাজনীতি ‘তিক্ত’ হয়ে উঠছে বলে মন্তব্য করেন ভারতের প্রধান বিচারপতি। সংসদীয় গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করার পাশাপাশি বিরোধী দলকে শক্তিশালী করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
এন ভি রমনা বলেন, শক্তিশালী, প্রাণবন্ত ও সক্রিয় বিরোধী দল শাসনব্যবস্থার উন্নয়নে সহায়তা করে। তারা সরকারের ভুলত্রুটি শুধরে দেয়।
ভারতে আইনপ্রণয়নের গুণমান নিয়েও প্রশ্ন তোলেন দেশটির প্রধান বিচারপতি। তিনি বলেন, দুঃখজনকভাবে, দেশে আইন প্রণয়নের গুণমান হ্রাস পাচ্ছে।
বিশদ আলোচনা ও যাচাই-বাছাই ছাড়াই ভারতে আইন পাস করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন এন ভি রমনা।
ভারতের ফৌজদারি বিচারব্যবস্থার বর্তমান প্রক্রিয়াকে একটি ‘শাস্তি’ বলে অভিহিত করেন দেশটির প্রধান বিচারপতি। তিনি বলেন, ভারতের ফৌজদারি বিচারব্যবস্থায় অনেকগুলো চ্যালেঞ্জ রয়েছে। তাড়াহুড়ো করে নির্বিচারে গ্রেপ্তার, জামিন পেতে অসুবিধা, বিচারাধীন ব্যক্তিদের দীর্ঘ কারাবাস প্রভৃতি বিষয়ের দিকে জরুরি মনোযোগ দরকার।
এন ভি রমনা বলেন, ফৌজদারি বিচার প্রশাসনের দক্ষতা বাড়ানোর জন্য আমাদের একটি সামগ্রিক কর্মপরিকল্পনা দরকার। পুলিশের প্রশিক্ষণ ও সংবেদনশীলতা, কারাব্যবস্থার আধুনিকীকরণ ফৌজদারি বিচার প্রশাসনের উন্নতির একটি দিক।
সূত্র: প্রথম আলো