আদালত চত্বরে বিচারপ্রার্থীসহ বিচারসংশ্লিষ্টদের দুর্ভোগ নিরসনের উদ্যোগ নিয়েছেন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী। এরই অংশ হিসেবে ইতোমধ্যে উচ্চ আদালতে বিচারপ্রার্থীদের বিশ্রামের জন্য একটি শেড নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। আদালতের সড়ক ভবন চত্বরে এটির নির্মাণকাজ চলছে। পাশাপাশি দেশের অধস্তন আদালতের প্রতিটি চত্বরে এমন শেড (বিশ্রামাগার) স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আর এসব শেডের নাম দেওয়া হয়েছে ‘ন্যায়কুঞ্জ’।
‘ন্যায়কুঞ্জে’ থাকবে বিচারপ্রার্থী জনগণের বসার স্থান, ওয়াশ রুম, ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার ও ছোট্ট একটি স্টেশনারি শপ। এই ‘ন্যায়কুঞ্জ’ স্থাপনের জন্য ইতোমধ্যে আইন মন্ত্রণালয়, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্টদের কাছে চিঠি পাঠিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন।
চিঠিতে বলা হয়েছে, দেশের প্রত্যেক জেলার জেলা ও দায়রা জজ আদালত প্রাঙ্গণে জেলাভেদে কমপক্ষে ১০০ (একশত) জনের এবং চৌকি আদালতে ৪০-৫০ জনের বসার উপযোগী বিচারপ্রার্থী-বিশ্রামাগার স্থাপনের প্রয়োজনীয়তা অনুধাবন করেছেন। এসব বিচারপ্রার্থী-বিশ্রামাগারে নারী ও পুরুষের জন্য আলাদা ইউনিট, দুগ্ধপোষ্য শিশুর মাতার জন্য আলাদা কক্ষ, প্রত্যেক ইউনিটে ২টি টয়লেট এবং ২টি ইউনিটেই সুপেয় পানির ব্যবস্থা করার কথা বলা হয়েছে চিঠিতে।
‘ন্যায়কুঞ্জ’ স্থাপনের ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ সাইফুর রহমান বলেন, বর্তমান প্রধান বিচারপতি যেদিন শপথ গ্রহণ করেন, সেদিনই প্রধান বিচারপতি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে সারা দেশের আদালতে আসা বিচারপ্রার্থীদের দুর্ভোগের বিষয়টি অবহিত করেছেন। তখনই প্রধানমন্ত্রী এমন বিশ্রামাগার করার উদ্যোগ নিতে বলেন।
সে অনুযায়ী আইন সচিব, গৃহায়ণ ও গণপূর্তের প্রধান প্রকৌশলীর সঙ্গে প্রধান বিচারপতিসহ জ্যেষ্ঠ বিচারপতিরা এ বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে বৈঠক করেন। এরপর এই ‘ন্যায়কুঞ্জ’ স্থাপনসহ অবকাঠামোগত বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্ট জায়গাগুলোয় পত্র দেওয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করেন সাইফুর রহমান।
তিনি আরও জানান, সুপ্রিম কোর্টে এখন কোনো মামলার এফিডেভিট করতে হলে বিচারপ্রার্থীকে সশরীরে আসতে হয়। আবার আগাম জামিনের জন্যও বিচারপ্রার্থীদের সশরীরে আসতে হয়। কিন্তু তাদের বসার কোনো জায়গা নেই। কোনো ওয়াশ রুম নেই। সে জন্য সড়ক ভবনে একটি শেড নির্মাণের কাজ চলছে।
সাইফুর রহমান বলেন, সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল বজলুর রহমান এবং আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রারের প্রত্যক্ষ তদারকি, সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর সঙ্গে দফায় দফায় মিটিং করে ডিজাইন ঠিক করে নির্মাণকাজ চলছে। আশা করছি, সুপ্রিমকোর্ট চত্বরে স্থাপিত ‘ন্যায়কুঞ্জ’ খুব শিগগিরই উদ্বোধন করা হবে।