কোনো শিশুই অপরাধী হয়ে জন্মগ্রহণ করে না। পরিবেশ-পরিস্থিতিই একজন শিশুকে অপরাধী করে তোলে। কিছু স্বার্থান্বেষী মানুষের আশ্রয়ে এরা বিচরণ করে অপরাধ জগতের বিভিন্ন পর্যায়ে।
এজন্য শিশুদের অপরাধের বিচার প্রচলিত আইনে করা হয় না। পৃথক ও বিশেষ আইনে শিশু অপরাধীদের বিচার হয়ে থাকে। এবার শিশু আদালতের জন্য পৃথক কক্ষ বরাদ্দের নির্দেশনা জারি করেছে সরকার।
আজ মঙ্গলবার (১৯ জুলাই) আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব মো. একরামুল হক শামীম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা গেছে।
এতে বলা হয়, ইউনিসেফ বাংলাদেশ -এর কারিগরি সহায়তায় আইন ও বিচার বিভাগ কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন ‘স্ট্রেংদেনিং ক্যাপাসিটি অব জুডিসিয়াল সিস্টেম ফর চাইল্ড প্রোটেকশন ইন বাংলাদেশ’ প্রকল্পের আওতায় শিশু আইন, ২০১৩ এর বিধান অনুযায়ী শিশু আদালতের কক্ষ সজ্জিত করার নিমিত্তে পৃথক কক্ষ বরাদ্দ প্রদানপূর্বক প্রকল্প কার্যালয়কে জরুরিভিত্তিতে অবহিত করার জন্য নির্দেশিত হয়ে অনুরোধ করা হলো।
ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, সিলেট, বরিশাল, রংপুর ও ময়মনসিংহের জেলা ও দায়রা জজের প্রতি এ নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, আইনের সঙ্গে সংঘাতে জড়িত ও আইনের সাথে সংশ্লিষ্ট বিচার শিশু আদালতে করার বিধান রয়েছে বর্তমান শিশু আইনে। এই আইন অনুসারে প্রত্যেক জেলা সদরে এবং মেট্রোপলিটন এলাকায় একটি করে শিশু আদালত রয়েছে।
অতিরিক্ত দায়রা জজ পদমর্যাদার একজন বিচারক এই আদালতের অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করে থাকেন। কোনো জেলায় অতিরিক্ত দায়রা জজ না থাকলে উক্ত জেলার জেলা ও দায়রা জজ তার নিজ দায়িত্বের অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে শিশু আদালতের দায়িত্ব পালন করেন।
প্রচলিত আদালতের কাঠগড়ায় ও লালসালু ঘেরা আদালত কক্ষের পরিবর্তে একটি সাধারণ কক্ষে এবং প্রচলিত আদালতের দিবস (মামলার দিন) ও সময়ের বাইরে অন্য কোনো দিবস ও সময়ে শিশু আদালতের বিচারকার্য পরিচালনার সুস্পষ্ট বিধান রয়েছে।
আইনে আরও বলা আছে, শিশু আদালতে বিচার চলাকালীন আইনজীবী, পুলিশ বা আদালতের কোন কর্মচারী আদালতকক্ষে তাদের পেশাগত বা দাপ্তরিক পোশাক পরিধান করতে পারবে না।
আইনে বিধান থাকলেও দেশের আদালতসমূহে আলাদা কোনো শিশু আদালত কক্ষ নেই। এমনকি অসংখ্য মামলার ভারে ভারাক্রান্ত অতিরিক্ত দায়রা জজগণকে তাদের দায়িত্বের অতিরিক্ত হিসেবে শিশু আদালতের দায়িত্বও পালন করতে হয়।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের আগস্টে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত প্রাঙ্গণে দেশের প্রথম শিশু আদালত কক্ষের উদ্বোধন করেন তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন। এরপর থেকে শিশুদের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিচার তাদের জন্য নির্ধারিত এই বিশেষ কক্ষেই অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।