চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলার মুছাপুরে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে দুই হাত হারানো শিশু আবদুল্লাহ আল মামুনকে (১২) পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ কেন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
আজ রোববার (২৪ জুলাই) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের সমন্বয়ে গঠিত দ্বৈত বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।
চার সপ্তাহের মধ্যে খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব, পিডিবির চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্ট নয়জন বিবাদীকে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার অনীক আর হক ও আইনজীবী ইশরাত হাসান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অরবিন্দ কুমার রায় ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আব্বাস উদ্দিন।
বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান। তিনি বলেন, বিদ্যুতায়িত হয়ে দুই হাত হারানো চট্টগ্রামের সন্দীপের ১২ বছরের শিশু আবদুল্লাহ আল মামুনকে পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ দিতে আদালত রুল জারি করেছেন। পাশাপাশি শিশুটিকে কী ধরনের চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে, তার আরও কী চিকিৎসার প্রয়োজন এবং এর সম্ভাব্য ব্যয় কত হতে পারে, এসব জানিয়ে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলেছেন। শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের পরিচালককে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
জানা যায়, আবদুল্লাহ আল মামুন মুছাপুর ইউনিয়নের ওয়ার্কশপ ব্যবসায়ী মো. আব্দুল আলিমের ছেলে। ২০২১ সালের ২৫ মে আলিমের দোকানের পাশে একটি দোতলা ভবনে মিস্ত্রিরা অ্যালুমিনিয়ামের কাজ করছিলেন। মামুন ওই ভবনের ছাদে কাজ দেখতে যায়। ভবনে ছাদের নিয়মবহির্ভূতভাবে ক্যাপ ও কভারহীন বিদ্যুতের লাইন স্থাপন করা হয়েছিল। মামুনের হাত বিদ্যুৎ লাইনের তারে স্পর্শ লাগলে বিদ্যুতায়িত হয়।
পরে তাকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় স্বর্ণদ্বীপ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে তার অবস্থা গুরুতর হওয়ায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চামেক) হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চমেক হাসপাতালে সাতদিন চিকিৎসা শেষে তাকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নেওয়া হয়। বার্ন ইনস্টিটিউটের চিকিৎসকদের পরামর্শে মামুনের দুই হাত কনুই পর্যন্ত কেটে ফেলা হয়।
এ ঘটনায় মামুনের বাবা ক্ষতিপূরণ চেয়ে চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ বিদ্যুৎ সরবরাহ কেন্দ্রে আবেদন জানান। ওই আবেদনে সাড়া না পেয়ে সংশ্লিষ্টদের আইনি নোটিশ পাঠান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইশরাত হাসান। নোটিশ পাঠানোর পরও কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় গত মে মাসে হাইকোর্টে রিট করা হয়।