এক সরকারি চাকরিজীবীর মৃত্যুর পর তাঁর স্ত্রী সেজে পেনশনের টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় এক নারীকে সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
সোমবার (৩ অক্টোবর) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৭ এর বিচারক মো. শহিদুল ইসলাম এ আদেশ দেন।
দণ্ডিত নারীর নাম শেফালী বেগম। তবে আসামি শেফালী বেগম বর্তমানে পলাতক রয়েছে। আদালত তার অনুপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন। আসামি পলাতক থাকায় আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী সাগর গণমাধ্যমকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সহকারী সচিব হামিদুর রহমান ১৯৮৬ সালে অবসর গ্রহণের পর নিজে পেনশন গ্রহণান্তে ১৮ সেপ্টেম্বর ১৯৯৯ সালে মারা যান। তার স্ত্রী আগে মারা যাওয়ায় এবং ছেলে-মেয়েরা প্রাপ্ত বয়স্ক থাকায় পেনশন বিধি অনুযায়ী তার পেনশন কার্যক্রম শেষ হয়ে যায়।
তবে হামিদুর রহমানের মৃত্যুর ৮ বছর পর ২০০৭ সালের ২৮ মে আসামি শেফালী বেগম তাঁর একমাত্র বিধবা স্ত্রী সেজে পারিবারিক পেনশনের জন্য আবেদন করেন। আবেদনের সমর্থনে তিনি হামিদুর রহমানের সঙ্গে বিয়ের দুটি ভুয়া কাবিননামা, ওয়ারিশ সার্টিফিকেট দাখিল করেন।
এর পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৯৯ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০১৬ সালের আগস্ট পর্যন্ত সময়ের পেনশন বাবদ হামিদুর রহমানের ভুয়া স্ত্রী সেজে প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে সাত লাখ টাকা সরকারি কোষাগার থেকে উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন শেফালী বেগম।
ভুয়া ওয়ারিশ সার্টিফিকেট ও মিথ্যা কাবিননামা দিয়ে হামিদুরের বউ সেজে পেনশনার হয়ে অর্থ আত্মসাৎ করায় আসামির বিরুদ্ধে দুদকের সহকারী পরিচালক সোহানা আক্তার শেরেবাংলা নগর থানায় লিখিত এজাহার দায়ের করেন।
২০১৮ সালের ৮ মে তদন্ত কর্মকর্তা সোহানা আক্তার তার তদন্তে এবং প্রাপ্ত সাক্ষ্যের ভিত্তিতে শেফালী বেগমের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।
২০১৯ সালের ২৪ জানুয়ারি ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৭ আসামি শেফালী বেগমের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। বিচার চলাকালীন আদালত ১০ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন। সকল বিচারিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে আদালত আজ রায় ঘোষণা করেন।