জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) তৈরির কাজটি নির্বাচন কমিশনের (ইসি) পরিবর্তে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের অধীনে দিতে মন্ত্রী পরিষদের সিদ্ধান্তকে সংবিধান পরিপন্থী বলে জানিয়েছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন।
আজ মঙ্গলবার (১১ অক্টোবর) দেওয়া এক বিবৃতিতে এ কথা জানান তিনি। মাহবুব উদ্দিন খোকন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সম্পাদক, বিএনপি দলীয় সাবেক সংসদ সদস্য এবং বর্তমানে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের নির্বাচিত সদস্য।
বিবৃতিতে মাহবুব উদ্দিন খোকন বিবৃতিতে বলেন, ১০ অক্টোবর মন্ত্রী পরিষদ সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, এনআইডি কার্ড প্রস্তুতের দায়িত্ব স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে ন্যস্ত করা হলো। সরকারি এই সিদ্ধান্ত গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১১৯ এর সাথে সাংঘর্ষিক এবং সংবিধান পরিপন্থী। মন্ত্রী পরিষদ আরও সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, নির্বাচন কমিশন চাইলে ১৮ বছরের বেশি বয়সিদের তথ্য নিতে পারবে।
সংবিধানের ১১৯ অনুচ্ছেদে বলা হয়, রাষ্ট্রপতি পদের ও সংসদের নির্বাচনের জন্য ভোটার-তালিকা প্রস্তুতকরণের তত্ত্বাবধান, নির্দেশ ও নিয়ন্ত্রণ এবং অনুরূপ নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের ওপর ন্যস্ত থাকিবে।
বিবৃতিতে মাহবুব উদ্দিন খোকন আরো বলেন, ভোটার তালিকা এবং জন্ম নিবন্ধন বা জাতীয় পরিচয়পত্র একই বিষয়বস্তু নয়। সরকার মন্ত্রী পরিষদের এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে একটি বড় ধরনের বিভ্রান্তির জন্ম দিয়েছে। নির্বাচনের স্বচ্ছতার জন্য প্রথমে ভোটার তালিকা প্রণয়নের লক্ষ্যে সংবিধান অনুযায়ী ভোটার আইডি কার্ডের ব্যবস্থা গ্রহণ করে নির্বাচন কমিশন। পরে এই ভোটার আইডি কার্ডের বহুবিধ ব্যবহারের জন্য এনআইডি (ন্যাশনাল আই,ডি) কার্ড হিসাবে আইনের মাধ্যমে নামকরণ করা হয়। যেখানে সংবিধানে ১১৯ অনুচ্ছেদে অনুযায়ী ভোটার তালিকা প্রস্তুত করণের তত্ত্বাবধান, নির্দেশ ও নিয়ন্ত্রণ এবং অনুরুপ নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের ওপর ন্যস্ত থাকবে।
এ অবস্থায় মন্ত্রী পরিষদের এই সিদ্ধান্ত সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক ও সংবিধান পরিপন্থী ও বেআইনি। এই সিদ্ধান্ত আসন্ন সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সরকারের ষড়যন্ত্রের একধাপ অগ্রগতি ছাড়া আর কিছুই নয় বলে মন্তব্য করেন সুপ্রিম কোর্টের ওই আইনজীবী।
প্রসঙ্গত, গতকাল সোমবার ‘জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন আইন, ২০২২’র খসড়া শর্ত সাপেক্ষে অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এ আইন অনুযায়ী এনআইডি সেবা নির্বাচন কমিশন থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের কাছে চলে যাবে।