দেশে মামলাজটের প্রসঙ্গে সুপ্রিম কোর্ট হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল বলেন, এখন যদি মামলা নেওয়া বন্ধ করে দেওয়া হয় তারপরও বিচারাধীন মামলাগুলো সব বিচারক মিলে ৩০ বছরে শেষ করা যাবে না। কারণ প্রচলিত ব্যবস্থায় মামলা নিষ্পতি করতে দীর্ঘ সময়ের প্রয়োজন হয়। অবকাঠামোগত অনেক অসুবিধা থাকা স্বত্ত্বেও বিচারকরা মামলাজট নিরসনের জন্য পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। কিন্তু প্রচলিত ব্যবস্থার কারণে সম্ভব হচ্ছে না। এজন্য বিকল্প ভাবতে হবে।
শুক্রবার বরগুনা পৌরসভা মিলনায়তনে মিডিয়েশন বিষয়ক কর্মশালায় তিনি এসব কথা বলেন। এ কর্মশালার এ আয়োজন করে বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল মিডিয়েশন সোসাইটি(বিমস)।
মামলাজট কমাতে মিডিয়েশন বিকল্প হতে পারে উল্লেখ করে বিচারপতি আশরাফুল কামাল বলেন, মিডিয়েশনের মাধ্যমে মামলা নিষ্পত্তি করতে নতুন আইনি কাঠামা, নীতিমালা তৈরি করতে হবে। সংসদে এই দাবি তুলতে হবে। পৃথিবীর উন্নত দেশগুলোতে বিচারকরা বিচারের জন্য মামলা খুঁজে পান না। তারা তাদের বিচার ব্যবস্থায় মিডিয়েশন পদ্ধতি প্রয়োগ করেছেন। আমাদের চুপ করে থাকলে চলবে না। সবাইকে কথা বলতে হবে। কারণ বিশ্বে আমাদের দেশকে মামলাবাজের দেশ হিসেবে পরিচিত হতে দিতে পারি না।
মিডিয়েশনের প্রচলন এখনও দেশে ব্যাপকভাবে হয়নি উল্লেখ করে বিচারপতি আশরাফুল কামাল আরও বলেন, মিডিয়েশন পদ্ধতি সমাজের সর্বস্তরে ছড়িয়ে দিতে হবে। আইন বিশাল এক সমুদ্র। মানুষের কল্যাণে আইনের প্রয়োগ করতে হবে। মিডিয়েশনের মাধ্যমে শান্তি প্রতিষ্ঠা করে দেশকে কল্যাণ রাষ্ট্রে পরিণত করতে হবে।
বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ মো. আনিসুর রহমানের সভাপতিত্বে কর্মশালায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর, কমিউনিটি মিডিয়েশন সেন্টারের চেয়ারম্যান সেলিমা সোবহান খসরু, অ্যাক্রিডিটেড মিডিয়েটর অ্যাডভোকেট পঙ্কজ কুমার কুন্ডু, বরগুনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মশিউর রহমান খান, বরগুনার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মাহবুব আলম, বরগুনার পুলিশ সুপার মো. আব্দুস সালাম, অতিরিক্ত জেলা জজ শুভ্রা দাশ, বিমসের বাংলাদেশ অ্যাম্বাসেডর অমিও প্রাপন চক্রবর্তী, বরগুনা পৌরসভার মেয়র অ্যাডভোকেট কামরুল আহসান মহারাজ, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম শিকদার ও বরগুনা প্রেসক্লাবের সভাপতি সঞ্জিত কুমার দাশ।
কর্মশালায় উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন বিমসের চেয়ারম্যান জ্যেষ্ঠ আইনজীবী অ্যাডভোকেট এস এন গোস্বামী।