জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের দায়িত্ব পালনের ওপর বিচারিক আদালতের দেওয়া অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আদেশ আট সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। ফলে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী জাপার চেয়ারম্যান হিসেবে কাজ চালিয়ে যেতে পারবেন তিনি।
এ সংক্রান্ত বিষয়ে জি এম কাদেরের রিভিশন আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে আজ রোববার (৫ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি মুহাম্মদ আবদুল হাফিজের একক হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
জি এম কাদেরের আইনজীবী শেখ মুহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, বিচারিক আদালতের দেওয়া অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা হাইকোর্ট স্থগিত করায় জি এম কাদেরের দায়িত্ব পালনে আর কোনো বাধা নেই।
এর আগে গত ১৯ জানুয়ারি ঢাকার জেলা জজ আদালত জি এম কাদেরের করা আপিল গ্রহণযোগ্যতার আবেদন খারিজ করেন। ওই আদেশ চ্যালেঞ্জ করে গত রোববার উচ্চ আদালতে বিবিধ আবেদন করেন জি এম কাদের।
দলীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যানের ওপর আদালতের দেওয়া অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা খারিজ আদেশের বিরুদ্ধে করা বিবিধ আপিল আবেদন বিষয়ে ৯ জানুয়ারি শুনানি গ্রহণ করেন ঢাকার জেলা জজ আদালত।
গত বছরের ৩০ অক্টোবর এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ আদালত জাপার চেয়ারম্যান হিসেবে জি এম কাদেরের দলীয় কোনো ধরনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও দায়িত্ব পালন থেকে বিরত রাখতে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আদেশ দিয়েছিলেন।
এই আদেশ খারিজ চেয়ে আবেদন করেছিলেন জি এম কাদের। সেটিও খারিজ হয়ে যায়। পরে খারিজের ওই আদেশ চ্যালেঞ্জ করে গত বছরের ২৩ নভেম্বর ঢাকার জেলা জজ আদালতে এই আপিল আবেদন করেন জি এম কাদের।
গত বছরের ৪ অক্টোবর জাতীয় পার্টি (জাপা) থেকে বহিষ্কৃত নেতা দলটির সাবেক এমপি জিয়াউল হক মৃধা নিষেধাজ্ঞা চেয়ে মামলা করেন। বাদীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের ৩০ অক্টোবর ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ আদালত জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হিসেবে জি এম কাদেরের দলীয় কোনো প্রকার সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও দায়িত্ব পালন থেকে বিরত রাখতে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আদেশ দেন।
মামলায় দল থেকে জিয়াউল হকের বহিষ্কারাদেশকে বেআইনি ঘোষণা এবং দলীয় গঠনতন্ত্রের ২০-এর উপধারা ১(১) অবৈধ ঘোষণার আবেদন জানানো হয়। মামলায় জি এম কাদের ছাড়াও নির্বাচন কমিশনের সচিব, জাপার মহাসচিব, সাংগঠনিক সম্পাদক ও যুগ্ম দপ্তর সম্পাদককে বিবাদী করা হয়। জিয়াউল হক জাপার সাবেক সংসদ সদস্য এবং দলের চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ছিলেন। গত বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর তাঁকে দল থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
জি এম কাদেরের পক্ষে আদালতে বলা হয়েছে, জিয়াউল হককে আইন মেনে দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ আদালতে আরেক মামলায় চেয়ারম্যান হিসেবে জি এম কাদেরকে বেআইনি ঘোষণার ডিক্রি চেয়ে গত বছরের ২৩ অক্টোবর মামলা করেন জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্যসহ সব পদ-পদবি অব্যাহতি পাওয়া আরেক নেতা মসিউর রহমান (রাঙ্গা)। দুটি মামলা বিচারাধীন।